ভাড়াটিয়াদের তথ্য গোপন রাখতে বাধ্য ওসি

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীতে বাড়িওয়ালাদের মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের যে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে তা থানার বাইরে যাবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেছেন, ‘থানার ওসি এই তথ্য গোপন রাখতে বাধ্য। এই তথ্য সরকারি অন্য কোনো সংস্থা, ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক বা অন্য কেউ পাবে না।’

নাগরিকরা ব্যক্তিগত তথ্য দিতে না চাইলে জোর করার দরকার নেই উল্লেখ করে কমিশনার আরো বলেন, ‘বৈবাহিক অবস্থা বলতে না চাইলে জোর করা যাবে না। কারো মোবাইল নম্বর না দিলেও আপত্তি নেই। তবে বর্তমান, স্থায়ী ঠিকানা ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিলেই হবে।’

সোমবার দুপুরে গাউসিয়া মোড়ে নিউমার্কেট থানার উদ্যোগে আয়োজিত ‘বিট পুলিশিং’ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

এই তথ্য সংগ্রহের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, নগরবাসীর তথ্য না জানলে পুলিশের কাজ করা কঠিন। তথ্য ছাড়া এখন সবই অন্ধকার। অন্ধকার আর হাতে-পা বেঁধে সাঁতার কাটা একই কথা। অন্ধকারে কে কাকে খুন করে তা বুঝব কী করে?

পুলিশ বাড়িওয়ালাদের মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ শুরুর পর বিষয়টির বৈধতা প্রশ্ন আদালত পর্যন্তও গড়ায়। তবে শেষ পর্যন্ত আদালত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আছাদুজ্জামান বলেন, নগরীর দুই কোটি মানুষের সঙ্গে পুলিশ ওয়ান টু ওয়ান কথা বলবে। পুলিশই জনগণ, জনগণই পুলিশ। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা দেবে, শৃঙ্খলার মধ্যে রাখবে। পুলিশ জনগণের বন্ধু হয়ে কাজ করবে। পুলিশ জনগণকে হয়রানি করবে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যাবে না। সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে আমরা রাজধানীকে সম্পূর্ণ নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তুলবো।

প্রতিটি থানায় ১০ জন করে পুলিশ সদস্যকে আইটি ট্রেনিং ও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। তাদের কাজ হবে, প্রাপ্ত তথ্য সঠিকভাবে নিবন্ধন করা।

আছাদুজ্জামান বলেন, ‘জনগণের প্রতি খবরদারি করা পুলিশের কাজ না। আমাদের কাজ আপনাকে নিরাপত্তা ও সেবা দেয়া। আপনাদের সেবা করাই আমাদের কাজ। আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছি। আপনাদের নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলতে এসেছি।

অনুষ্ঠানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শেখ মুহাম্মদ মারুফ হাসান বলেন, পুলিশ-জনগণের সম্পৃক্ততায় আইনের শাসন। বাড়িওয়ালার কাছে তথ্য না থাকায় অপরাধীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সকলের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায়, ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার আব্দুল বাতেন, উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. মারুফ হোসেন সরদার, রমনা জোনের সহকারি কমিশনার জসিম উদ্দিন, রমনা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান, নিউ মার্কেট থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) ইয়াসিন আরাফাত, গাউসিয়া মার্কেট সমিতির সভাপতি মো. ফারুক, ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তৌফিক এহসান প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই