‘ভারতের ঋণের টাকা শর্তহীন’

ভারত থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া ২০০ কোটি ডলার খরচে কোনো শর্ত নেই। এই টাকা বাংলাদেশ প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনো খাতে ব্যয় করতে পারবে।

বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা জানান। তিনি বলেন, ঋণের টাকা কোন কাজে ব্যয় করবো সে ব্যাপারে কোনো শর্ত নেই। আমাদের যে কোনো প্রয়োজনে এ টাকা ব্যয় করবো।

ফরাজী জানতে চান, ভারতের কাছ থেকে পাওয়া দুই বিলিয়ন ডলার বিল কোন কোন খাতে ব্যবহার করা হবে, তার কোন শর্ত আছে কি না?

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঋণের টাকা কোন কাজে ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যেভাবে চাই, যে কোনো প্রকল্পে ব্যবহার করতে পারবো।

স্বাধীনভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে এ ঋণ নেওয়া হয়েছে। এ টাকা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যয় করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে উন্নয়ন খাতে ব্যয় এ অর্থ ব্যয় করা হবে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

এসএম মোস্তফা রশিদীর আরেক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা সীমান্ত চুক্তি করে গিয়েছিলেন ১৯৭৪ সালে। বাংলাদেশের জনগণ তাকে না হারালে অনেক আগেই তা বাস্তবায়ন হতো। এরপরে যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলেনি। জিয়া সরকার, এরশাদ সরকার, খালেদা জিয়া সরকার, এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকারও এ বিষয়ে কেউ কোন উদ্যেগ নেয়নি।

এরপর আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই। আজ সেটা বাস্তবায়ন হলো। এটা আমাদের উদ্যোগের সাফল্য। কিন্তু মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি যখন হয়, তখন অনেকেই বলেছিলো এটা গোলামী চুক্তি, দেশ বেচার চুক্তি, দাসত্বের চুক্তি। অনেকেই অনেক কথা বলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আবার দেখি এখন তারাই এই চুক্তিকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। এটাই মনে হয় আমাদের দেশের রাজনৈতিক চরিত্র। বাংলাদেশে থাকলেও তাদের অন্তরে পরাজিত পাকিস্তানের ধ্যান-ধারণা, তারাই এ চুক্তির বিরোধিতা করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন গঙ্গার পানি বণ্টনের ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি করি, তখনও বিএনপি জামায়াত নানা কথা বলেছে। পানি আসবে না, পানি নেই। এই পানিতে অজু হবে না। আবার পার্বত্য শান্তি চুক্তি করতে গেলাম তখনো বিএনপি নেত্রী বলেছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। উনি ফেনীর সংসদ সদস্য। আমি তখন বলেছিলাম উনি কি বাংলাদেশের সদস্য হবেন, নাকি ভারতের লোকসভার সদস্য হবেন। তখন উনি (খালেদা জিয়া) আমার ওপর খেপে যান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে ওপর দিয়ে ঝগড়াঝাটি আর ভেতর দিয়ে তোষামোদি করে কোনো অর্জন হয় না। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও স্বাধীন অবস্থান থেকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হয়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে খুব দ্রুতই ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে পারবো এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত-ভুটান-বাংলাদেশ ও ভারত-নেপাল-বাংলাদেশ এভাবে ত্রিদেশীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে চার দেশের মধ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে এবং আলোচনা চলছে।



মন্তব্য চালু নেই