বড় দুর্যোগ সামলানোর সাধ্য নেই ফায়ার সার্ভিসের, লোকবল ও সরঞ্জামের অভাব

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কাজের পরিধি বাড়লেও বাড়েনি সুযোগ-সুবিধা আর সক্ষমতা। প্রয়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জামের অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে একসময়ের এই দমকল বাহিনীর। এই বাহিনীর নাম পরিবর্তন হলেও তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি সক্ষমতার। এমনকি এ বাহিনীতে নেই প্রয়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জাম। সংস্কার করা হয়নি ফায়ার স্টেশনের ভবনগুলোও। দেশের ৭৬টি উপজেলায় এখনো ফায়ার স্টেশনই নেই।

জানা যায়, দেশে ২৭২টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন আছে। এর মধ্যে রাজধানীতেই আছে ১৫টি। মোট জনবলের পরিমাণ সাত হাজারের কিছু বেশি। রাজধানীর ১৫টি স্টেশনে আছে প্রায় ৫০০ কর্মী। রাজধানীর স্টেশনগুলো ‘এ’ ক্যাটাগরির। রাজধানীর উপকণ্ঠের গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের স্টেশনগুলোকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়েছে। অন্য সব স্টেশন ‘সি’ ক্যাটাগরির। ‘এ’ ক্যাটাগরির স্টেশনগুলোতে ৩৫ জন, ‘বি’ ক্যাটাগরির স্টেশনগুলোতে ২৭ জন এবং ‘সি’ ক্যাটাগরির স্টেশনগুলোতে ১৬ জন করে কর্মী আছেন। ‘এ’ ক্যাটাগরির স্টেশনগুলোতে তিনটি বড় পানির গাড়িসহ বড় ধরনের হাইড্রোলিক ল্যাডারসহ (মই) ভারী কিছু যন্ত্রপাতি আছে। তবে মফস্বলের স্টেশনগুলোতে মাত্র একটি করে পানির গাড়ি আছে। বড় মই নেই।

এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে ডুবুরি দল এবং অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও মফস্বলে নেই এই সুবিধা।

তবে আগুন নেভানো ছাড়াও সব ধরনের দুর্যোগে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সবার আগে ছুটে যান। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান,

জানা গেছে, ভূমিকম্প এবং অগ্নিকাণ্ড-পরবর্তী উদ্ধারকাজ চালানোর দায়িত্ব যে ফায়ার সার্ভিসের, রাজধানীতে তাদের ভবনগুলোই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। গাড়ি রাখার জন্য পিলারের ওপর ভবন তৈরি করা হয়। এ কারণে এমনিতেই ওইসব ভবন অন্য ভবনের চেয়ে দুর্বল হয়। ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে এই ভবনগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য প্রথমেই ছুটে আসে এলাকার লোকজন। এ বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার জন্য দেশে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা পর্যায়ে ৭৬টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় স্থাপন প্রকল্প ১৬ বছর আগে শুরু হলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ১৯৯৮ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পটি কম বরাদ্দ এবং নির্ধারিত জমি নিয়ে মামলা-সংক্রান্ত জটিলতায় মুখ থুবড়ে আছে। এ সময় অন্য প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০টি স্টেশন স্থাপন শেষে চালু করা হয়েছে। নতুন আরো ১০৩টি ফায়ার স্টেশন স্থাপনের দুটি প্রকল্প শুরু হয়েছে। আগের প্রকল্পগুলো সম্পন্ন না হওয়ায় নতুন এসব স্টেশন স্থাপনের সময় নিয়েও শঙ্কায় আছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।



মন্তব্য চালু নেই