বড়দিন ২৫ ডিসেম্বর নয়, ৬ জানুয়ারি!!

২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্ট জন্মেছিলেন। তাই সারা বিশ্বের খ্রিস্টান সম্প্রদায় এ দিনটিকে সম্মান জানিয়ে বড়দিন হিসেবে উদযাপন করে থাকে। এটি তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব।

তবে তথ্যটিতে একটু ভুল আছে!! আসলে সারা বিশ্বে নয়, পৃথিবীর এমন অনেক দেশ আছে যেখানে ৬ জানুয়ারি বড়দিন উদযাপন করা হয়।

প্রকৃত অর্থে যিশুর জন্মগ্রহণের সঠিক দিনক্ষণ পাওয়া যায় না। বাইবেলের নতুন নিয়মে (নিউ টেস্টামেন্ট) ম্যাথু লিখিত সুসমাচার (ম্যাথু ১: ১৮ – ২: ১২) এবং লুক লিখিত সুসমাচারে (লুক ১: ২৬ – ২: ৪০) বর্ণিত যিশুর জন্মকাহিনীকে বড়দিন উৎসবের মূলভিত্তি হিসেবে ধরা হয়।

এই উপাখ্যান অনুসারে, স্বামী জোসেফের সাহচর্যে বেথলেহেম শহরে উপস্থিত হয়ে মেরি যিশুর জন্ম দেন। লুক লিখিত সুসমাচারে (লুক ২: ৭) বলা হয়েছে: ‘আর তিনি আপনার প্রথমজাত পুত্র প্রসব করলেন এবং তাকে কাপড়ে জড়িয়ে যাবপাত্রে শুইয়ে রাখলেন, কারণ পান্থশালায় তাদের জন্য স্থান ছিল না।’

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এটি বেথলেহেমের চার্চ অব দ্য নেটিভিটির অভ্যন্তরে। এক স্বর্গদূত বেথলেহেমের চারপার্শ্বস্থ মাঠের মেষপালকদের যিশুর জন্ম সম্বন্ধে অবহিত করেন। এ কারণে তারাই সেই দিব্য শিশুকে প্রথম দর্শন করার সৌভাগ্য লাভ করে।

অনেক খ্রিস্টানই মনে করেন, যিশুর জন্ম আদি বাইবেলের ত্রাণকর্তা সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীকে পূর্ণতা দেয়।

ম্যাথু লিখিত সুসমাচার অনুসারে, কয়েকজন পুণ্যবান ব্যক্তি স্বর্ণ, সুগন্ধি তেল ও ধূপ নিয়ে শিশুটিকে দেখতে যান। কথিত আছে, একটি রহস্যময় তারকা তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যায়। সাধারণভাবে বেথলেহেমের তারকা নামে পরিচিত এই তারকাটি ছিল প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে ইহুদিদের রাজার জন্মবার।

২০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে মিশরে একদল মানুষ যিশুর জন্মদিন উদযাপন শুরু করে। ২২১ খ্রিস্টাব্দে মিশরের একটি দিনপঞ্জিতে লেখা হয়েছিল, মাতা মেরি ২৫ মার্চ গর্ভধারণ করেন। সেই হিসাবে যিশুর জন্মতারিখ নির্ধারণ করা হয় ৬ জানুয়ারি। তখন থেকে ৬ জানুয়ারি যিশুর জন্মদিন উৎসব উদযাপন করা হতো। তবে এরও বহু আগ থেকে রোমান সাম্রাজ্যে ২৫ ডিসেম্বর সূর্যদেবতার জন্মউৎসব উদযাপন করা হতো।

খ্রিস্টান যাজকরা দেখলেন ওই দিন খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা পৌত্তলিকদের সূর্য দেবতার জন্মউৎসবে শরিক হয়। খ্রিস্টানরা যাতে ওই দিন পৌত্তলিকদের উৎসবে অংশ নিতে না পারে সেজন্য চার্চ যিশুর জন্ম উৎসবের তারিখকে এগিয়ে নিয়ে আসেন।

৩৫৪ খ্রিস্টাব্দের রোমান ক্রমপঞ্জিতে ২৫ ডিসেম্বর যিশুর জন্মদিন উল্লেখ করে দিনটিকে যিশুর জন্মদিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ৪৪০ সালে পোপ একে স্বীকৃতি দেন।

আরমেনিয়ায় এ ধরনের কোনো পৌত্তলিক উৎসব না থাকায় তারা কিন্তু ৬ জানুয়ারিই বড়দিন উৎসব করে থাকে। এ কারণে এশিয়া মাইনরের দেশগুলোতে ৬ জানুয়ারি এ উৎসব উদযাপন করা হয়।



মন্তব্য চালু নেই