ব্লগার অভিজিৎ রায়ের অকাল মৃত্যু
ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির ভুলে বিব্রত অন্য অভিজিৎ
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়ের দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন। তারপরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি তাদের ফেসবুক পেজে অন্য একজনের ছবি দিয়ে নিউজ শেয়ার করে। আর এতে করে বিব্রত অবস্থায় পরেন অভিজিত রায় কাব্য। অভিজিত রায় কাব্য তার নিজের ওয়েবসাইটে একটি ব্লগ লিখেন। পাঠকদের জন্য তার লিখাটুকু তুলে ধরা হল:
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়ের দুর্বৃত্তদের হাতে মৃত্যু কখনোই কাম্য নয় । কেউ কারোও মতের বিরুদ্ধে কিছু বললে অবশ্যই তার প্রতিকার আছে। আমরা তার এই বিষয়টার ত্রুটি গুলো তুলে ধরতে পারি। উনাকে মেরে ফেলা অবশ্যই নিন্দনীয়।
আজকে আমি যেই বিষয়টা অবতারনা করতে যাচ্ছি সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত বিষয়। আমি অভিজিত রায় কাব্য… যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত একজন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ।
আজকে হঠাৎ করে আমার এক বন্ধু আমাকে ফেসবুকে নক করে জিজ্ঞেস করলো- আমি জীবিত কি না ? আমার ফেসবুক একাউন্টই বা কে চালাচ্ছে ? আমি তো পুরো অবাক বনে গেলাম! অবশ্য এর আগে আমার আরেক বন্ধুর কাছ থেকে ব্লগার অভিজিৎ রায়ের মৃত্যু সংবাদ শুনেছিলাম। পরে এই বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারলাম যে বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য টিভি চ্যানেল (ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি) ব্লগার অভিজিৎ রায়ের মৃত্যু সংবাদ ছাপাতে গিয়ে উনাদের ফেসবুক পেজে আমার ছবি দিয়ে দিয়েছেন।
আমি উনাদের ফেসবুক পেজে গিয়ে আমার ছবি দেখে পুরোপুরি বিস্মিত হয়ে গেলাম। এতো দায়িত্বজ্ঞানহীন কি করে হতে পারেন উনারা। দু’নামে কিছুটা মিল থাকলেই যে দুজন লোক এক হয় না, এই বুদ্ধি টুকু পর্যন্ত উনাদের নেই। উনারা কি বুঝতে পারেন এই সংবাদ শোনার পর আমার মা বাবার কি অবস্থা হয়েছে। আমার স্ত্রীরই বা কি অবস্থা হয়েছে? আমাকেই বা কতটুকু ধকল সইতে হয়েছে। আমার মা-বাবা, স্ত্রী, সমস্ত বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজন ও আমার সকল শুভাকাংক্ষী অবিরাম আমাকে ফোন, ইমেইল ও ফেসবুকে নক করে যাচ্ছিল।
আমি বাংলাদেশে অনেকের সাথে যোগাযোগ করলাম । আমি টিভি চ্যানেলটির ফেসবুক পেজে মেসেজ পর্যন্ত করলাম কিন্তু এর পরও উনারা ছবিটা রিমুভ করতে প্রায় দু’ঘন্টা সময় লাগিয়েছেন। আমি আরও বিস্মিত হয়েছি এতবড় ঘটনা হয়ে যাওয়ার পরেও উনাদের মুখ দিয়ে একবারের জন্যেও দুঃখিত শব্দটা নিঃস্মৃত হয়নি। ন্যুনতম শালীনতা প্রদর্শন করার প্রয়োজনীয়তা মনে করেন নি। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে “যা করেছি বেশ করেছি।”
আমি উনাদের পোস্টে সবার কমেন্ট দেখলাম সেগুলো খুব বাজে ছিল এবং যেহেতু ঐ জায়গায় আমার ছবি ছিল তাই সবাই আমাকেই ব্লগার অভিজিৎ রায় মনে করেছেন, যা আমার জন্য বিব্রতকর। আমি এইজন্য আমার জীবন নিয়ে অনেক শঙ্কিত । আমি শঙ্কিত বাংলাদেশে বসবাসরত আমার মা-বাবা, স্ত্রী ও আত্নীয় স্বজনদের নিয়ে। আমি বিশ্বাস করি সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা এবং সাংবাদিকদের কাছে সমাজ ও দেশ অনেক ভাল কিছু আশা করে।
আমি আজকের এই ঘটনার জন্য নিন্দা জ্ঞাপন করছি। আমি আশা করি উনারা উনাদের ভুল স্বীকার করবেন এবং আরও দায়িত্বশীল হবেন। দেশ ও জাতির জন্য ভাল কিছু করবেন ।।
মন্তব্য চালু নেই