বিজ্ঞানীরা জীবনকে রিপ্রোগ্রাম করার দ্বারপ্রান্তে

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনবিজ্ঞানীরা একটি কৃত্রিম ই কোলাই জিনোমের মধ্যে ৬২.২১৪ ডিএনএ বেস জোড়া প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে শরীরের জিনোম ‘রিকোডিং’ করার ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে গেছেন।

‘রিকোডিং’ জিনোম ব্যাপকভাবে প্রাণীর ভাইরাস প্রতিরোধী উন্নয়নের দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এমনকি জীববিজ্ঞানীরা এখন থেকে সকল নতুন সিন্থেটিক অ্যামিনো অ্যাসিডের কোড করতে সক্ষম হবেন। মূলত, এটা আমাদের জীবনকে রিপ্রোগ্রাম করতে বিজ্ঞানীদের সক্ষম করবে।

গবেষকরা কী কাজ করেছেন এটা বোঝার জন্য আমাদের প্রথমে বুঝতে হবে ডিএনএ কিভাবে কাজ করে। ডিএনএ এবং তার চার জোড়া বেস- এ, টি, সি এবং জি, যারা কিনা আরএনএ তে রুপান্তরিত হয় যেখানে কোড ট্রিপলেটস আকারে থাকে, একটি নির্দিষ্ট অ্যামিনো অ্যাসিড জন্য একটি কোড থাকে (কোষের বিল্ডিং ব্লক) যা কোষের ব্যবহার করা উচিত।

উদাহরণস্বরূপ, এ-জি-জি কোড অ্যামিনো অ্যাসিড এ্যারিনজিন এর জন্য এবং সি-সি-জি কোড অ্যামিনো অ্যাসিড প্রোলিন এর জন্য।

মার্ক লেজৌই নামের একজন গবেষক বলেন, ‘প্রায় সব জীবই একটি সাধারণ জিনগত কোড শেয়ার করে। যেমন: জেনেটিক ক্রম এ-জি-জি প্রায় সব প্রাণীর জন্য একই।’

কিন্তু সেখানে প্রাকৃতিকভাবে ৬৪টি সম্ভবত ট্রিপলেটস, বা কোডনস এবং মাত্র ২০ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড বিদ্যমান। এর অর্থ এই যে, তিন বা চারটি কোডনস একটি অ্যামিনো অ্যাসিড এনকোড করতে পারে। এবং কিছু ওভারল্যাপ হয়। উদাহরণস্বরূপ, সি-সি-সি, সি-সি-জি, এর মতোই প্রোলিন এর জন্য এনকোড করতে পারে এবং কোষগুলো প্রায় একইভাবে এই কোডনসগুলোর সঙ্গে আচরণ করে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এখন ৬২.২১৪ ডিএনএ বেস জোড়া প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে এবং ই কোলাই এর জিনের ৩.৫৪৮ জুড়ে ৬৪টি কোডন এর মধ্যে ৭ ধরনের কোডন সরানোর মাধ্যমে ই কোলাই মধ্যে এই ‘ওভারল্যাপ’ গুলো সরাতে চাচ্ছে।

আপনার মনে হতে পারে যে এটি কোষের জন্য দুঃসংবাদ হতে পারে, কিন্তু দলটি ইতিমধ্যেই তাদের উদপাদিত ৬৩ শতাংশ রিকোডেড জিন পরীক্ষা করে দেখেছে এবং প্রায় সবগুলোই অপেক্ষাকৃত সুস্থ ই কোলাই সৃষ্টি করেছে।

এই কাজের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা হলো যে, এইভাবে ডিএনএ রিকোড ব্যাকটেরিয়াকে সব ধরনের ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম করে তুলতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই