বিজিপি আমার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় : রাজ্জাক

মিয়ানমারে ৮ দিন বন্দী থাকার পর দেশে ফিরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, আমি সুস্থ আছি। সীমান্তে পাহারা দেওয়ার সময় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী পুলিশ (বিজিপি) আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। দেশের মাটিতে ফিরে আসতে পেরে আমি আনন্দিত।

মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী পুলিশের (বিজিপি) হাতে অপহৃত আবদুর রাজ্জাককে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবি প্রতিনিধি দল ফেরত আনে। এ সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।

এ সময় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা টেকনাফ ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু জার আল জাহিদ জানান, পতাকা বৈঠকে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার যাতে পুনারাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নায়েক রাজ্জাককে নির্যাতনের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে দুটি স্পিডবোটে করে মিয়ানমারের মংডুর উদ্দেশে রওনা দেয়ে বিজিবির ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে টেকনাফ ৪২ বিজিবির অধিনায়ক ছাড়াও একজন চিকিৎসক, একজন দোভাষী ও চারজন বিজিবি কর্মকর্তা ছিলেন। মংডুর দেওয়ান নান্দি হলে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

অপরদিকে মিয়ানমারের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্র্রাঞ্চ ২-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল থি হান।

বৈঠক শেষে নায়েক রাজ্জাক এবং তার ব্যবহৃত অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গোলাবারুদ বিজিবি প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সন্ধ্যা ৬টা ১৯ মিনিটে নায়েক রাজ্জাককে নিয়ে নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটি দিয়ে ফিরে আসে বিজিবি প্রতিনিধি দল।

গত ১৭ জুন সকালে টেকনাফের দমমিয়া চেকপোস্টের বিপরীতে নাফ নদীর লালদিয়া নামক স্থানে একদল চোরকারবারিকে ধাওয়া করে বিজিবি সদস্যরা। একপর্যায়ে চোরকারবারিরা বিজিবির আওতার বাইরে চলে যায়। এ সময় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের সদস্যরা কোনো কারণ ছাড়াই বিজিবির টহল দলের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে বিজিবির সদস্য বিপ্লব কুমার গুলিবিদ্ধ হন। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গোলাগুলির সময় বিজিবির নায়েক আবদুর রাজ্জাক নাফ নদীতে পড়ে গেলে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের সদস্যরা বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে তাকে ধরে নিয়ে যায়।

এর পর থেকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি মিয়ানমার। উল্টো মিয়ানমার পুলিশের হেফাজতে নায়েক আব্দুর রাজ্জাককে হাতকড়া পরিয়ে রাখার ছবি প্রকাশ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। সর্বশেষ রাজ্জাককে ফেরত দিতে ৫৫৫ জন অভিবাসীকে ফেরত আনার শর্ত দেয় মিয়ানমার। অবশেষে বৃহস্পতিবার বিনা শর্তে রাজ্জাককে ফেরত দেয় মিয়ানমার।

https://youtu.be/tlXGUj4q5qk



মন্তব্য চালু নেই