বিজিএমইএ ভবন ভাঙার রিভিউ শুনানি মুলতবি

রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বেআইনিভাবে প্রায় দুই দশক আগে গড়ে তোলা গার্মেন্ট শিল্প মালিকদের সংগঠনের (বিজিএমইএ) ১৬তলাবিশিষ্ট ভবন ভেঙে ফেলতে সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে (রিভিউ) করা আবেদনের ওপর শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।

আগামী রোববার শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

গত বছরের ২ জুন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ভবনটি ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। গত বছরের ৮ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে রিভিউ আবেদন করা হয়।

জানা যায়, ২০১০ সালের ২ অক্টোবর রাজউকের অনুমোদন ছাড়া বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ বিষয়ে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের দৃষ্টিতে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ডিএইচএম মুনিরউদ্দিন।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। রুলে ভবনটি ভাঙার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন এবং ভবনটি ভাঙার নির্দেশ দেন।

এতে স্থগিতাদেশ চেয়ে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৫ এপ্রিল চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের রায়ের ওপর ছয় সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেন। পরে এ সময়সীমা বাড়ানো হয়।

দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের দেয়া ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছিল, বিজিএমইএ ভবনটি সৌন্দর্যমণ্ডিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। এ ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট না করা হলে এটি শুধু হাতিরঝিল প্রকল্পই নয়, সমস্ত ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে।

রায়ে ভবনটি ভাঙতে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়। রায়ের কপি হাতে পেয়ে ২০১৩ সালের ২১ মে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন বিজিএমইএর সভাপতি, যা শুনানির পর গত বছরের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যায়।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৯৮ সালে বিজিএমইএ তাদের প্রধান কার্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য সোনারগাঁও হোটেলের পাশে বেগুনবাড়ী খালপাড়ের এ জায়গাটি নির্ধারণ করে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাছ থেকে ৫ কোটি ১৭ লাখ টাকায় জমিটি কেনে।

ওই বছরেরই ২৮ নভেম্বর ভবনটি তৈরির কাজ শুরু হয়, যা শেষ হলে ২০০৬ সালের অক্টোবরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ভবনটির উদ্বোধন করেন।



মন্তব্য চালু নেই