বিএসএমএমইউতে ৫০০ কিডনি প্রতিস্থাপনের অনন্য রেকর্ড

দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের অনন্য রেকর্ড স্পর্শ করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে কিডনি বিকল রোগীদের নতুন জীবন ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৮২ সালে সাবেক আইপিজিএমআর এ প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয়। কালের পরিক্রমায় পেরিয়ে গেছে ৩৫ বছর।

বিএসএমএমইউ’র একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বিএসএমএমইউতে মোট ৫০৪ জনের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ৩০টিরও বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।

সূত্র জানায়, বিএসএমএমইউ’র কিডনি স্থাপনে এ সাফল্যের সার্বিক তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।

বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর ও ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলালের কাছে ৫০০ কিডনি প্রতিস্থাপনের রেকর্ড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ যাবত মোট ৫০৪টি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে।

তিনি জানান, ১৯৮২ সালে সাবেক আইপিজিএমআরে প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন হয়। এরপর নানা সীমাবদ্ধতার কারণে ছয় বছর কিডনি প্রতিস্থাপন বন্ধ থাকে। ১৯৮৮ সাল থেকে পুনরায় কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয়।

তিনি আরও জানান, কিডনি প্রতিস্থাপনে ডোনার সবচেয়ে বড় সমস্যা। রক্তের সম্পর্কের স্বজন ছাড়া কিডনি প্রদানে আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকায় দুই কিডনি বিকল হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হয় না। তাছাড়া বছর পাঁচেক আগে জয়পুরহাটের কালাইয়ে অর্থের বিনিময়ে কিডনি বেচাকেনা হচ্ছে এবং এসব কাজে চিকিৎসকরা জড়িত এমন অভিযোগ এনে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় কিডনি প্রতিস্থাপন বাধাগ্রস্ত হয়।

কিডনি প্রতিস্থাপনের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকদের কেউ কেউ আইনি ঝামেলা এড়াতে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। ওই ঘটনার জের ধরে এখনও অনেকে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে দ্বিধাবোধ করছে।

কিডনি প্রতিস্থাপনে কত টাকা খরচ হয় এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, দুই সপ্তাহের প্যাকেজে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেড ভাড়া ও অস্ত্রোপচার ও ওষুধপত্র বাবদ মোট খরচ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

তিনি জানান, দেশে মোট যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয় তার সিংহভাগই বিএসএমএমইউতে হয়। তবে প্রচার-প্রচারণার অভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা এখনও আশানুরূপ নয়। এছাড়া গত পাঁচ বছর আগে নেতিবাচক প্রতিবেদনের খেসারত কিডনি বিকল রোগীদের দিতে হচ্ছে।

জানা গেছে, সোমবার সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে প্রোভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ এস এম জাকারিয়া স্বপন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আলী আসগর মোড়ল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আব্দুল্লাহ আল হারুন, ইউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সাজিদ হাসান, কিডনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শহিদুল ইসলাম সেলিম, শিশু কিডনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান, অ্যানেসথেসিয়া, অ্যানালজেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বণিক প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন।



মন্তব্য চালু নেই