বিএনপির বিক্ষোভ ২৮ এপ্রিল, ৪ মে গণ-অনশন

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং গণঅনশন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২৮ এপ্রিল দেশের সব জেলা, উপজেলা ও মহানগর পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ৪ মে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গণঅনশন পালন করবে দলের নেতা-কর্মীরা। তবে ঢাকায় ডিএমপির অনুমতি সাপেক্ষে কর্মসূচির স্থান ও সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের এ কর্মসূচির কথা জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি প্রশ্ন করেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃনমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা ও গুম চলতে থাকলে গণতন্ত্রের চর্চা কিভাবে সম্ভব? বিএনপির স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাধা দিতে এবং ভবিষ্যত নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নীলনকশার অংশ হিসেবে সরকার এ কর্মকান্ড চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়ার জন্য ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন। এখন তাঁর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁর নামে দুদকের মাধ্যমে মামলা দেয়া হয়েছে। রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এসব করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একজনও বাদ নেই যাদের নামে মামলা হয়নি। ‘মিথ্যা মামলার’ পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং আওয়ামী সর্মথকরা দেশব্যাপী বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে অব্যাহতভাবে গুম করে চলেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

মির্জা আলমগীর এ ধরনের ‘নীলনকশার’ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একইসঙ্গে নেতাকর্মীদের নামে সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

তিনি দাবি করেন, ‘১/১১এর সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামেও অসংখ্য মামলা হয়েছিলো। কিন্তু তারা একতরফাভাবে এসব মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। দলের ২০জন ফাঁসির আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার মাধ্যমে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।’

মির্জা আলমগীর আরো বলেন, ‘দেশে মানুষ নিরাপদ নয়। বর্তমানে তাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। অব্যাহত খুন, গুম মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানাচ্ছে।’

তিনি বলেন, বিএনপি নিরস্ত্র গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আন্দোলন করছে।

বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড সম্পর্কে গণমাধ্যমে সঠিকভাবে আসছে না-অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘আপনারাও (সাংবাদিক) এখন নিরাপদ নন। সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। কারন এসব ঘটনা গনতন্ত্র ও মানবতার শত্রু।’

তিনি বলেন, ‘সবার প্রত্যাশা ছিলো ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পরে দেশে অতি দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু দূর্ভাগ্য, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের পরে পুরোপুরি উল্টো কথা বলছে। এখন বলছে ৫ বছর পরে নির্বাচন হবে। অবৈধ ক্ষমতা পাকাপোক্ত আর গণতন্ত্র ধ্বংস করতে এমনটি করা হচ্ছে।’

সকাল ১১টায় দলের যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমন্ডলী এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকবৃন্দের উপস্থিতিতে যৌথসভা শুরু হয়। প্রায় একঘণ্টা স্থায়ী সভা শেষ হয় দুপুর ১২টায়।



মন্তব্য চালু নেই