বাড়ছে প্রবাসীদের আকস্মিক মৃত্যু, শঙ্কিত স্বজনরা

পরিবারের ভাগ্য বদলের জন্য প্রবাসে এসে ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। হঠাৎ করেই শামিল হচ্ছেন মৃত্যুর মিছিলে। প্রবাসীদের এই আকস্মিক মৃত্যু মিছিল দিন দিন বেড়েই চলছে।

গত কয়েক দিনে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা হারাতে ঘটেছে এমন কয়েকটি ঘটনা। তাদের এই আকস্মিক মৃত্যুতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাদের স্বজনরা।

নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার শাহজাহান দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে ৯ এপ্রিল দেশে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ৮ এপ্রিল (শনিবার) সকালে রুমের সবাই যার যার কাজে চলে যান। দেশে যাওয়ার জন্য চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে বাসায় ছিলেন তিনি। সকালে বনরুটি দিয়ে নাস্তা সেরে হাতের কাজ সম্পন্ন করেন। দুপুরের খাবার খাওয়ার প্রস্তুতির সময় নিজের খাটে বসেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন শাহজাহান।

তার পাশের রুমে বাংলাদেশি ইসমাইল জানান, ৯তারিখ সকালের ফ্লাইটে দেশে যাওয়ার কথা ছিলো তার। দেশে গিয়ে বিবাহ উপযোগী মেয়েকে পাত্রস্থ করার পরিকল্পাওনার কথাও জানিয়েছিলেন শাহজাহান। গতমাসে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমান শাহজাহানের স্ত্রী। স্ত্রীর মৃত্যু এবং মেয়ের বিবাহ সংক্রান্ত চিন্তা থেকেই শাহজাহানের স্ট্রোক হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে প্রতিবেশীরা।

এদিকে গত চার মাস আগে সাড়ে ৮ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব আসেন মালয়েশিয়া প্রবাসী আলম মাতবরের দ্বিতীয় ছেলে সোহেল মাতবর (২০)। রিয়াদে একরুমে বাস করতেন ৮জন। রাতে সবাই একসঙ্গে খেয়ে ঘুমিয়েছিলেন। সকালে উঠে পাঁচ জন কাজে চলে যান। বাকি তিন জনের মধ্যে দুই জন ঘুম থেকে উঠে নাস্তা এনে সোহেলকে ডাক দিলে তার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশের সঙ্গে আসা চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সোহেলের বড় ভাই সোহাগ জানান, সোহেলের লাশ বর্তমানে সেমুসী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সোহেলের সুরতহাল রিপোর্টে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাড়ে আট লাখ টাকায় বিদেশে এসে কাজ কর্ম না পেয়ে ঋণ পরিশোধের চিন্তা-ভাবনার কারণেই সোহেল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন সোহাগ।



মন্তব্য চালু নেই