‘বাংলাদেশে গুম-ক্রসফায়ারের বিচার নেই’

বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্বিচারে গ্রেফতার, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় বিচার নেই বলে দাবি করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

‘বাংলাদেশ: ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস, ক্ল্যাম্পডাউন অন ক্রিটিকস। অ্যাকশন অন এক্সট্রিমিস্ট ভায়োলেন্স নিডস টু রেসপেকটস রাইটস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়।

বিগত বছরের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার ‘ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট-২০১৭’ তে বাংলাদেশে নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে এইচআরডব্লিউ।

এতে বলা হয়, সরকার গত বছর গণমাধ্যম ও বেসামরিক মানুষের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের হাতে আটক, পঙ্গু, নিহত হওয়া ছাড়াও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্লগার, ধর্মনিরপেক্ষ, শিক্ষাবিদ, সমকামী অধিকারকর্মীদের সহিংসতার হাত থেকে সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। অনেকেই জঙ্গিদের হাতে প্রাণ দিয়েছেন।

তবে এইচআরডব্লিউ’র মতে, পরবর্তীতে সরকার ব্লগার, ধর্মনিরপেক্ষ, শিক্ষাবিদ, সমকামী অধিকারকর্মীদের খুনিদের ধরতে উদ্যোগী হয়। তবে খুনিদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় না এনে কর্তৃপক্ষ জুন মাসে মাত্র আট দিনে ১৫ হাজার জনকে আটক করে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘১ জুলাই গুলশানের ক্যাফেতে হামলার পরপরই কয়েক ডজন জঙ্গি সমর্থক গোষ্ঠীর সদস্যকে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করে রাষ্ট্রীয় বাহিনী।’

প্রতিবেদনটিতে সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামসকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘বাংলাদেশী নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিচারে গ্রেফতার, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ রয়েছে। তবে এই অবমাননাকর চর্চার কোনো বিচার নেই।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বেড়ে চলা নিরাপত্তা সমস্যা থেকে দেশের জনগণকে সুরক্ষা দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা মানবাধিকার সমুন্নত রেখে করতে হবে।

বেসামরিক লোকজন, মিডিয়া ও বিরোধী দলের প্রতি সরকারের দমন-নিপীড়ন বেড়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের দুটি শীর্ষ সংবাদপত্রের সম্পাদককে একাধিক মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে আছে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ফৌজদারি মামলা।

এছাড়া গত অক্টোবরে সরকার বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করে, যার মাধ্যমে বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের ওপর ব্যাপক ও অবাধ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পায় বলে অভিযোগ করে এইচআরডব্লিউ।



মন্তব্য চালু নেই