বাংলাদেশের ঋণ শোধ করতে আসছেন মোদি!

নরেন্দ্র মোদির বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা সফরকে ঘিরে ঘিরে চলছে চাওয়া-পাওয়ার নানান জল্পনা কল্পনা। এ সফর থেকে বাংলাদেশ কি পাবে আর কি পাবে না, তার হিসেব নিকেষ চলছে এখন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার আজকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা দিবেন মোদি। ভারতের সাথে সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিশেষ করে ভারতের নিরাপত্তা বিষয়ে হাসিনা বন্ধুর চেয়েও বেশি কিছু করেছেন। টাইমস অফ ইন্ডিয়া বলছে, মোদির বার্তা হবে, বাস্তবিক অর্থেই ভারতের জন্য এটা ঋণ শোধের সময়। অন্যদিকে বাংলাদেশের জন্য উপহার নিয়ে এদেশ সফরে আসছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী; এমন খবর দিয়েছে হিন্দুস্থান টাইমস।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর বলছে, এ সফরে নি:সন্দেহে সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে সদ্য ভারতীয় পার্লমেন্টে পাস হওয়া সীমান্ত বিল। ঢাকায় দু দেশের প্রধানমন্ত্রীরা নবায়নকৃত এ চক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। আর হিন্দুস্থান টাইমসের খবরে বলা হচ্ছে, মোদির সফরে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ভারত প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋনচুক্তিও স্বাক্ষর করতে পারে।

২০১১ সালে মনমোহন সিংয়ের একমাত্র বাংলাদেশে সফরের সময় তিস্তা চুক্তি ইস্যুতে শেষ মুহুর্তে বেঁকে বসেন পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এবার মমতা মোদির সফর সঙ্গী হচ্ছেন এবং মোদির সাথে হাসিনার মূল বৈঠকেরও সময়ও উপস্থিত থাকবেন মমতা। কিন্তু এবারের সফরে মমতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন মোদি। মমতাকে সফরসঙ্গী হিসেবে রাজি করাতে তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোন ধরনের আলাপ না করার নিশ্চয়তা পর্যন্ত দিয়েছেন মোদি। মোদি ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির জন্য পশ্চিমবঙ্গকে অপরিহার্য অংশ বিবেচনা করছেন। বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের কৌশল হিসেবে তাই মমতাকে ড্রাইভিং সিটে বসিয়েছেন মোদি।

এমন অবস্থায় মমতা তিস্তা চুক্তিতে রাজি হওয়ার সঙ্কেত দিয়েছেন বলে সূত্রের বরাতে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। এ চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভাও বাংলাদেশের সাথে অর্থনীতি, সমুদ্রবন্দর ব্যাবহার ও কানেক্টিভিটির দিক দিয়ে আরো সম্পর্কোন্নয়নের উপর জোর দিয়েছে। সংবেদনশীলতার কারণে ভারত আপাতত ‘ট্রানজিট’ শব্দটা ব্যাবহার করতে চাইছে না বলে উল্লেখ করে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

মোদির সফরে ঢাকা-শিলং তৃতীয় বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া কলকাতা থেকে বাংলাদেশের মাগুরা হয়ে আগরতলা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহনেরও উদ্বোধন করার কথা রয়েছে মোদির এ সফরে।

এর আগে, লোকসভা ও রাজ্যসভায় সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পথে আইনগত বাধা দূর করাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার্লিন ওয়াল পতনের সাথে তুলনা করেছেন। শুধু ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রেই নয়, এ চুক্তি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার উপরই প্রভাব ফেলবে।



মন্তব্য চালু নেই