বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ

লক্ষ্যটা বিশাল, ৪৫৯। জিততে হলে অসাধ্য সাধন করতে হবে বাংলাদেশকে। তবে অসাধ্য সাধনের পিছু না ছুটে প্রাথমিক লক্ষ্যটা ছিল উইকেটে টিকে থাকা। তা আর পারলো কই? চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে উইকেট হারিয়েছে ৩টি; টাইগারদের সংগ্রহ ১০৩ রান। এখনও ভারতের চেয়ে পিছিয়ে আছে ৩৫৬ রান। ম্যাচ বাঁচাতে হলে আগামীকাল সারাদিন ব্যাটিং করতে হবে বাকি ৭ উইকেট নিয়ে। বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছেন চতুর্থ দিন শেষে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান। তাদের দিকে তাকিয়ে টাইগার শিবির।

সাধারণত চতুর্থ দিনের শেষ দিকে ভারতীয় উইকেট ভেঙে যায়। প্রায় তাই হয়েছে আজ। আর এ কারণেই শেষ দিকে ব্যাটিং করার ঝুঁকি নেয়নি ভারত। ওপেনিংয়ে নেমে তামিম টিকতে পেরেছিলেন মাত্র ১১ বল। অশ্বিনের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদনে সারা না দিলে ক্যাচের আবেদনে রিভিউ নেন ভারতীয় অধিনায়ক কোহলি। আর তাতে সফলও হন তিনি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় প্যাডে লেগে কোহলির হাতে যাওয়ার আগে তামিমের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যায়।

এরপর মুমিনুল হককে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন সৌম্য সরকার। ৬০ রানের জুটিও গড়েছিলেন। তবে জাদেজার বলে স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচ ধরেন আজিঙ্কা রাহানে। আউট হওয়ার আগে ৪২ রান করেন সৌম্য সরকার। ৬৬ বল মোকাবেলা করে ৭টি চারের সাহায্যে এ ইনিংস খেলেন তিনি।

সৌম্যর বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মুমিনুলও। সৌম্যর মতো প্রায় একই ঢংয়ে আউট হন তিনি। শুধু বদলেছে বোলার। জাদেজার বদলে অশ্বিন। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে গেলে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় রাহানের হাতে। ৬৩ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ২৭ রান করেন মুমিনুল।

এরপর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বাংলাদেশ দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। দিনের শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত আছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। ইতোমধ্যে গড়েছেন ২৮ রানের জুটি। স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করে ২১ রানে অপরাজিত আছেন সাকিব। তার সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত আছেন ৯ রানে।

নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৫৯ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। অনেকটা টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করে তারা। যদিও শুরুতেই দুটি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তাসকিন। তবে চেতশ্বর পুজারার ৫৪ ও অধিনায়ক কোহলির ৩৮ রানে ভর করে অল্প সময়েই বড় সংগ্রহ করে তারা। এছাড়া পাঁচ নম্বরে নেমে ২৮ রান করেন রাহানে। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব ও তাসকিন ২টি করে উইকেট পান।

এর আগে রোববার হায়দারাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৬ উইকেটে ৩২২ রান নিয়ে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। আগের দিন দুর্দান্ত খেলা মুশফিক-মিরাজের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল সবাই। তবে সবাইকে হতাশ করে দিনের চতুর্থ বলেই সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। ভুবনেশ্বরের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড আউট হন তিনি।

এরপর মুশফিককে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন তাইজুল। তবে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি। উমেশ যাদবের বাউন্সার থেকে বসে পড়লেও শেষরক্ষা হয়নি তার। হাতে লেগে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহার হাতে। ফলে ৩৮ বলে ১০ রান করেই সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

তাসকিনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন অসাধারণ ব্যাট করা মুশফিক। এরপর ৮ রান করে তাসকিনের বিদায়ের পর দ্রুত রান বাড়ানোর চেষ্টায় থাকা মুশফিকের ইনিংস শেষ হয় ১২৭ রানে। ২৬২ বলের মোকাবেলা করে ১৬টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। অশ্বিনের বলে ঋদ্ধিমান সাহাকে ক্যাচ দিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক। ফলে ৩৩৮ রানেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।



মন্তব্য চালু নেই