বন্দিরা বলেন আমরা কি ভিআইপি!

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে সব বন্দিকে সরানোর কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ২৫টি প্রিজনভ্যান ও আটটি বাসে করে নেওয়া হচ্ছে তাদের। বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পাহারায় ও মিডিয়াকর্মীদের তৎপরতা দেখে বন্দিরা প্রিজনভ্যান থেকে বলে ওঠেন, ‘আমরা কি ভিআইপি? আমাদের ছবি তুলছে কেন?

এ সময় তাদের হৈ-হুল্লোর করতেও দেখা গেছে।

শুক্রবার (২৯ জুলাই ২০১৬) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে প্রিজনভ্যান ও বাসে করে করে বন্দিদের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারের স্থানান্তরের কাজ শুরু হয়।

এদিকে, নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে যাওয়ার সময় কোনও কোনও প্রিজনভ্যান থেকে রাজনৈতিক দলের স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

কারা অধিদফতরের মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন,বন্দিরা কেরানীগঞ্জের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে যেতে পেরে খুশি। ঢাকা থেকে সেখানে গিয়ে বন্দিরা বেশ আরামে থাকবেন বলে আমি আশা করছি।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী বন্দিরা যেরকম সুযোগ পেয়ে থেকেন আমরাও তা নিশ্চিত করবো।

এর আগে কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) আবিদ হাসান জানান, বর্তমানে নতুন কারাগারটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। সেখানে মানবাধিকার সমুন্মত রেখে বন্দিরা সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। কেরানীগঞ্জের কারাগারটি পুরুষ কারাগার হওয়ায় ইতোমধ্যেই প্রায় সব নারী ও শিশুকে কাশিমপুরে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ এপ্রিল কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগার উদ্বোধন করেন। এরপর বন্দি স্থানান্তরের জন্য তারিখ নির্ধারণ হলেও নানা কারণে কার্যকর করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে কিছু ত্রুটি ধরা পড়ায় সেগুলোও সংস্কার করা হয়। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, কেস টেবিল, ফাঁসির মঞ্চসহ বেশকিছু স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। এটি এশিয়ার সর্বাধুনিক ও বৃহত্তম এই কারাগারটি। এর ধারণক্ষমতা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার।

কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে প্রায় ১৯৪ একর জায়গার ওপর চার শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে।

১৯৮০ সালের দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশে বেশ কয়েকটি বড় আবাসিক ভবন গড়ে ওঠে। এছাড়া আদালত থেকে কারাগারে আসামি নেওয়া আনায়ও পড়তে হয় দীর্ঘ যানজটে। এতে কারাগারের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা উভয়ই বিঘ্নিত হচ্ছে বলে উপলব্ধি করে তৎকালীন সরকার। ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কাউন্সিলের একটি সভায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সরানোর বিষয়টি প্রথম উঠে আসে।

১৯৯৪ সালে একে চূড়ান্তভাবে সরিয়ে দুটি কারাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি গাজীপুরের কাশিমপুরে ও অন্যটি কেরানীগঞ্জে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে একনেকে কেরানীগঞ্জে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় জমি অধিগ্রহণের কাজ। বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১১ সালের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু পরে তিন দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০১৭ সাল পর্যন্ত।



মন্তব্য চালু নেই