বদলি ঠেকাতে পারলেন না মিজারুল কায়েস

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মিজারুল কায়েসকে অবশেষে ব্রাজিলেই যেতে হচ্ছে। অনেক চেষ্টা-তদবির করেও বর্তমান দায়িত্ব ইংল্যান্ডে বাংলাদেশ হাইকমিশনার থেকে নিজের বদলি ঠেকাতে পারলেন না তিনি।

আগামী সপ্তাহের মধ্যেই মিজারুল কায়েসকে ব্রাজিলে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে বদলির সরকারি আদেশ আসছে বলে শনিবার নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র।
মন্ত্রণালয়ের একজন সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রশাসন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘সচিব থাকাকালীন বিতর্কিত কয়েকটি কাজের জন্য মিজারুল কায়েসকে হাইকমিশনার করে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। সেখানেও অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ মহল তাকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে।’ তবে পূর্ণ সচিব মর্যাদার এই হাইকমিশনারকে বদলি করার পেছনে সরকার ঠিক কী ভাবছে সে বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলতে রাজি হননি ওই কর্মকর্তা।
তবে বিভিন্ন বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দেয়া সাবেক এ পররাষ্ট্র সচিবকে সরকারিভাবে ব্রাজিলে বাংলাদেশকে পরিচিত করে তুলতে তার অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাতে পারবেন বলেও আশা করছেন মন্ত্রণালয়ের বহিঃ অনুবিভাগের একজন পরিচালক।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২১ জুলাই রাতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে কন্যা সম্মেলনে যোগ দিতে ইংল্যান্ডে যাচ্ছেন। সফর চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই হাইকমিশনার মিজারুল কায়েসকে দেয়া সরকারের সফরটিকে দ্বিপাক্ষিক একটি সফরে রূপান্তর করার কাজ দেয়া হয়। সেখানেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। যদিও ২২ জুলাই ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সৌজন্য সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পেরেছে হাইকমিশন।

এ ব্যর্থতার গুণেই (!) আগামী ২ মাসের মধ্যেই মিজারুল কায়েসকে ব্রাজিলে বদলি হয়ে যেতে হবে। যে দূতাবাসে জনবল মাত্র ৩ জন!

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে পররাষ্ট্র সচিব থাকাকালে সরকারি টাকায় বিদেশি দূতাবাস ও মিশনগুলোর জন্য ১৫ কোটি টাকা খরচে ৭০০টি চিত্রকর্ম কিনে বিতর্কিত হন মিজারুল কায়েস। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ৬৯টি দূতাবাস সাজাতে এ উদ্যোগ নেন তিনি। কিন্তু তার মধ্যে ৬০০টিই এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টোররুমে নষ্ট হচ্ছে। দরপত্র ছাড়াই ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে এসব কেনেন মিজারুল কায়েস। এগুলোর কোনো হিসাব দিতে পারেননি তিনি।

এই বিতর্কের জেরে তাকে যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার করা হয়। কিন্তু সেখানেও রাষ্ট্রীয় অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে।

এর আগে মালদ্বীপে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব ছেড়ে রাশিয়ায় নতুন দায়িত্ব পালনে যাওয়ার সময় কেবল মালামাল পরিবহনের খরচ হিসেবে অগ্রীম নেয়া প্রায় ৫৪ লাখ টাকার হিসাব না দেয়ায় তখনই কথা ওঠে। একইভাবে রাশিয়ায় রাষ্ট্রদূত থাকাকালে নেয়া অগ্রীম টাকারও হিসাব দেননি সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব।



মন্তব্য চালু নেই