বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত চেয়ে ট্রুডোকে বাংলাদেশি কিশোরীর চিঠি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি সাজাপ্রাপ্ত নুর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে চিঠি লিখেছে এক বাংলাদেশি কিশোরী। তার নাম মাশকুরা তাবাসসুম তাথৈ। বয়স ১৪ বছর। এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোরী বর্তমানে কানাডার ম্যাপল রিজ স্কুলের গ্রেড-৮ এর ছাত্রী। সেইসঙ্গে ওই স্কুলের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছে সে।

গত ৮ মার্চ লেখা তাবাসসুম তাথৈ তার চিঠিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখেছে, বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নুর চৌধুরী কানাডাকে তার নিরাপদ আশ্রয় বানিয়ে ফেলেছে। গত ২১ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর এই খুনি ও হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নুর চৌধুরী টরেন্টোতে বসবাস করছে। কানাডা নুর চৌধুরীর মতো খুনির নিরাপদ আবাসস্থল হতে পারে না।

২০১২ সালের ২৮ আগস্ট গ্রেড-৪ এর ছাত্রী থাকা অবস্থায় তাবাসসুম তাথৈ তার মা-বাবার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় পাড়ি জমায়। ভবিষ্যতে একজন আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ হওয়ার ইচ্ছা এই বাংলাদেশি কিশোরীর।

tathoy

তাথৈ তার ওই চিঠিতে আরও লিখেছে, ‘অন্যদের মতো আমিও আশায় বুক বেঁধে আছি, মানবতাবিরোধী অপরাধ করা নুর চৌধুরীকে অচিরেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে, যাতে করে তিনি তার সাজা ভোগ করতে পারেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার দায়ে নুর চৌধুরীসহ আরও ১১জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেন। আসামিদের অনেকের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। নুর চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানো হলে এক্ষেত্রেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি’।

কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে তার বাবা ই ট্রুডোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাথৈ লিখেছে- ‘১৯৭০ সালে নির্বাচনের পরে তৎকালীন পাকিস্তানে বেসামরিক শক্তির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে ছিলেন আপনার বাবা। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় দোসরদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন আপনার বাবা ই ট্রুডো। এমনকি পাকিস্তানে অস্ত্র রফতানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন তিনি’।

আমরা সবাই জানি, চলতি বছর ১৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করবে কানাডা কনফেডারেশন। আমাদের প্রত্যাশা, বঙ্গবন্ধুর খুনি নুর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে আপনি ২০১৭ সালকে চিরস্মরণীয় করে রাখবেন।’

উল্লেখ্য, কানাডা থেকে নুর চৌধুরীকে আইনি কারণে বহিষ্কার করা যাচ্ছে না। কোনো লোক যদি কানাডায় ভ্রমণে যান, যে ব্যক্তি তার নিজের দেশ বা অন্য দেশে গেলে মৃত্যুদণ্ড ভোগ করতে পারেন। এমন ব্যক্তি যদি নিজে উদ্যোগী হয়ে কানাডা না ছাড়েন তাহলে ওই ব্যক্তিকে কানাডার সরকার জোর করে ফেরত পাঠাতে পারে না। কারণ এই মর্মে ২০০১ সালে কানাডার সুপ্রিমকোর্ট একটি রায় দিয়েছিল। আর এই রায়েরই সুফল ভোগ করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নুর চৌধুরী।



মন্তব্য চালু নেই