বঙ্গবন্ধুকে হিমালয়সম মনে করতেন ফিদেল কাস্ত্রো
কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল কাস্ত্রো ৯০ বছর বয়সে শুক্রবার চির বিদায় নিয়েছেন। সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের এই প্রবাদপ্রতীম নেতা ছিলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছিলন কিউবার এই নেতা। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেক হিমালয়সম মহান নেতা মনে করতেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে তিনি বঙ্গবন্ধুকে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছিলেন। সতর্ক করেছিলেন পুরনো শাসন ব্যবস্থার পরবর্তী স্বাধীনতার উপযোগী শাসন ব্যবস্থা কায়েম না করলে প্রতিবিপ্লবীদের আঘাত আসতে পারে।
১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় ‘জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন’ এর সম্মেলনকালে ফিদেল কাস্ত্রো ও বঙ্গবন্ধু পার্শ্ববৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।
ওই বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘হিমালয় পর্বতমালা আমি দেখিনি। এখানে দেখা হলো। সাহস, ব্যক্তিত্ব ও দৃঢ়তায় এ মানুষটিকে আমার হিমালয়ের উচ্চতায় একজন মানুষ বলেই মনে হলো।’
বৈঠককালে কিউবার বিপ্লবের অভিজ্ঞতার আলোকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুকে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন কাস্ত্রো।
তিনি বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করায় জনগণের মধ্যে নতুন আকাংখার সৃষ্টি হয়েছে। ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামো যা ধারণ করতে অক্ষম।
কাস্ত্রোর পরামর্শ ছিল ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে সৃষ্ট রাষ্ট্র কাঠামোকে উচ্ছেদ করা এবং তার স্থলে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট শক্তিকে নিয়ে নতুন কাঠামো গড়ে তোলা।
তিনি পুরনো সেনাবাহিনী, প্রশাসন এবং আইন-কানুনের বদলে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সবকিছু নতুনভাবে গড়ে তুলতেও বলেছিলেন।
তবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মুক্তিযুদ্ধের শক্তির নেতৃত্বে রূপান্তরিত না হয়ে পুরনো কাঠামোতে বহাল রয়ে যায়।
যার সুযোগ নিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রতিবিপ্লবীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধকালে ভূমিকা রাখার জন্য ফিদেল কাস্ত্রোকে বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায়’ ভূষিত করে।
মন্তব্য চালু নেই