বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী শুক্রবার দুপুর ১২টায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৯৯ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টায় রৌহাদহ গ্রামের নিকট বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২’শ মিটার এলাকা ভেঙ্গে গিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানির নিচে ডুবে গেছে শত শত হেক্টর আমন আবাদ। গভীর রাতে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় নদী পাড়ের হাজার হাজার পরিবারের বাড়ীর মালামাল সরিয়ে নিতে পারে নি। এতে করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, রাতের আধারে ঘুমন্ত অবস্থায় কিছু বুঝে উঠার আগেই যমুনার পানিতে বাড়ীঘর ডুবে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অনেক পরিবারের বাড়ীর মালামাল ও গবাদীপশু পানির স্রোতে ভেসে গেছে। এতে করে ঘরে ঘরে কান্নার রোল পরে যায়। চন্দনবাইশা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের কন্যা নওখিলা পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী সোহানা আক্তার জানায়, রাতের আধারে বন্যার পানি ঢুকে ঘরবাড়ি ডুবে গিয়ে তাদের পড়াশুনার বইপুস্তক ভেসে যায়। সে ও তার ৫ভাই বোন বইয়ের অভাবে পড়াশোনা করতে পারবে না বলে জানান। এদিকে নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পার্শ্ববর্তী উপজেলা ধুনট ও গাবতলীর ২০টি গ্রাম বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শতশত হেক্টর জমির আমন আবাদ। বন্যায় আক্রান্ত পরিবারগুলো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে কোন মতে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যা দূর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের পাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পানি বন্দি পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন, সতর্ক অবস্থায় থাকার পরও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধকে রক্ষা করা সম্ভব হয় নি। আগামী শুষ্ক মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হবে। সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসক শফিকুর রেজা বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক পিপিএম বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বন্যায় আক্রান্ত পরিবারগুলোর মাঝে কোন ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করা হয় নি।



মন্তব্য চালু নেই