বই মানসম্মত না হলে জরিমানা

বিনামূল্যে সরবরাহকৃত পাঠ্যবই মানসম্মত না হলে সরবরাহকারীদের অবশ্যই জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। তবে তিনি বলেন, ‘এসব বই শিক্ষার্থীরা এক বছর পড়তে পারবে না, এমন নয়।’

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত এক সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

পাঠ্যবই ছাপার কাজ এখনো বাকী, সেজন্য সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছতে পারবে কি না- জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, ‘আজ পর্যন্ত ৮০ ভাগ জায়গায় বই পৌঁছে গেছে। কাজেই, সঠিক সময়ে বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছতে কোনো সমস্যা হবে না।’

এমপিওভুক্ত শিক্ষার্থীদের বেতনস্কেলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নতুন স্কেলে বেতন পাবেন। তবে এখনো যেহেতু বর্ধিত বেতন পাননি তাই তারা এটা এড়িয়ার হিসেবে একসঙ্গে তুলতে পারবেন।’

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নতুন করে কী মূল্যায়ন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে যেভাবে যাচাই-বাছাই হতো সেভাবেই হবে। অর্থাৎ যে বেতন পচ্ছেন সে নতুন স্কেলেও বেতন পবেন। আর কেউ অনুপযুক্ত হলে পাবেন না।’

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়ের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেবে কি না এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বচ্ছতা আনতে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়-ব্যয় আইনের মধ্যে নিয়ে আসা হবে।’

গত ২০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনুদান-সহায়তা নতুন বেতন স্কেলে কার্যকর হবে।

ড. ফরাস উদ্দিন কমিশন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার সুপারিশ করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ফরাসউদ্দিন কমিশনের রিপোর্ট থেকে সরে আসার কারণ নেই। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে (ডিআই) মাত্র ৩৪ জন লোক আছে। তারা পারবে না। বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে তথ্যগুলো আনছি।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষা হচ্ছে না, সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার গুণগত মান যা হওয়া উচিৎ তার চেয়ে পিছিয়ে আছি। এ জন্য মানসম্মত শিক্ষক প্রয়োজন। এখনো যথেষ্ট মেধাবীরা এ পেশায় আসছেন না।’

নতুন বেতন কাঠামোতে টাইমস্কেল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গ্রেড-১ এ যাওয়ার পথ বন্ধ হওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘টাইমস্কেলের মাধ্যমে তারা উচ্চস্তরে পৌঁছাতে পারতেন। কীভাবে তাদের সুযোগটা দেয়া যায় তা আলোচনা চলছে, যত দিন না হয়, আগের মতো সুবিধা পাবেন তারা।’

মাদরাসায় জঙ্গির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘সব মাদরাসা জঙ্গি তৈরি করে এটা ঠিক নয়। কিছু কিছু লোক ধর্মকে ব্যবহার করে। ধর্মকে ব্যবহার করে যাতে কেউ জঙ্গি কার্যক্রম করতে না পারে, সেটা দেখা উচিৎ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১ হাজার ৩০০ নতুন বিল্ডিং তৈরি করেছি, আরও ১ হাজার ৮০০ করবো। বিগত জোট সরকার একটিও করেনি। এছাড়া ৩৫টি মডেল মাদরাসা, ৩১টিতে অনার্স কোর্স চালু করেছি। আলাদা অধিদপ্তর করে দিয়েছি।’
ইসলামিক অ্যারাবিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে ভিসি নিয়োগ করা হয়েছে। ধর্ম নৈতিকতার মূলভিত্তি বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী।

পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা কোনো পাবলিক পরীক্ষা নয়। তবে যে পঞ্চম এবং অস্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আর পড়তে পারবে না তার জন্য এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

এ পরীক্ষা না হলে এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

তিনি জানান, বর্তমান শিক্ষানীতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারলে এসব পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না।

সংগঠনের সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমানের সঞ্চালনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই