বইমেলায় ফাগুনের হাওয়া

ফাল্গুন আসতে দেরি নেই। মাঘের শেষ সপ্তাহ চলছে। বাংলা একাডেমির আশপাশের আম গাছে অনেক দিন আগেই মুকুল এসেছে। শীতের শেষ কয়েকদিন সকালের মিষ্টি রোদটা তেতো লাগে। কিন্তু শিশু-কিশোরা রোদকে তোয়াক্কা করে না। শুক্রবার সকালে একঝাঁক শিশু-কিশোর কংক্রিটের ওপর পাটি বিছিয়ে পুরোদস্তুর চিত্রশিল্পীর মতো ছবি আকঁছিল। বলছি অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ষষ্ঠ দিনের কথা।

বইমেলার প্রথম শুক্রবার ছিল এটি। শুক্রবার মানেই শিশু প্রহর। শিশুপ্রহরের প্রথম দিনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে  মেলা শুরু হয়।

সকাল থেকেই বইমেলা সরব ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলায় আগতদের ঢল নামে। আজই প্রথম বইমেলায় ঢুকতে বইপ্রেমীদের লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। গত কয়েকদিনের তুলনায় বই বিক্রি বেড়েছে।

হাতে নতুন বই নিয়ে সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির মঞ্চে নাচ উপভোগ করছেন সমবেতরা। রাত সাড়ে ৮টায় মেলা শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু সময় গড়ালেও পাঠকরা মেলা থেকে বের হতে চাইছিলেন না যেনো। হঠাৎই দমকা হাওয়া এসে ধুলো উড়িয়ে দিতে শুরু করে। নিরুপায় হয়ে মেলা ছাড়তে শুরু করেন বইপ্রেমীরা।

গত ৫ দিনের তুলনায় ষষ্ঠ দিন মেলায় নতুন বই বেশি এসেছে। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ২শ ৯০টি। নজরুল মঞ্চে ৩১টি বইয়ের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্টজনেরা।

বিকেলে গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘রজনীকান্ত সেন: বাঙালির অন্তরের গীত রচয়িতা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক নূরুল আনোয়ার।

আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক আজিজুর রহমান এবং অধ্যাপক শিখা আরেফীন। সভাপতিত্ব করেন জামিল চৌধুরী।

প্রাবন্ধিক বলেন, ‘১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের আগে-পরে রবীন্দ্র সমসাময়িক কান্তকবি রজনীকান্ত সেন সারা বাংলাদেশের সংগীতপিপাসু মানুষের অন্তর স্পর্শ করেছিলেন তার রচিত অকৃত্রিম সরল শান্তরসের ভক্তিমূলক এবং দেশপ্রেমের গান দিয়ে।’

অধ্যাপক জামিল চৌধুরী বলেন, ‘রজনীকান্ত সেন ছিলেন বাঙালির স্বর্ণযুগের স্বর্ণসন্তান। তিনি শুধু সংগীত জগতেই বিচরণ করেননি, তার চিন্তার সুক্ষ্মতাও এক স্মরণীয় বিষয়। কারণ, তিনি বলেছেন অর্থের কাছে পরমার্থ যখন গৌণ হয়ে পড়ে তখন সত্যিই দুর্যোগের সময় ঘনিয়ে আসে।’

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অনিক বোসের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘স্পন্দন’ এর শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন।

সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী শাহীন সামাদ, ফেরদৌস আরা, সালাহউদ্দীন আহমদ, সুজিত মোস্তফা, এ. কে. এম. শহীদ কবীর পলাশ, মো মফিজুর রহমান, ফারহানা ফেরদৌসী তানিয়া এবং প্রিয়াংকা গোপ। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন ইমতিয়াজ সুলতান (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), সুনীল কুমার সরকার (কী-বোর্ড) ফিরোজ খান (সেতারা) এবং আবু কামাল (বেহালা)।



মন্তব্য চালু নেই