ফের ভাঙলো সেতুর গার্ডার, প্রকৌশলী আহত

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবারও নির্মাণাধীন দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর একটি গার্ডার ভেঙে পড়েছে। এতে একজন প্রকৌশলী আহত হয়েছেন। সেতুর পিলারের উপর স্থাপনের সময় গেন্ট্রি ক্রেন (স্থানান্তর যন্ত্র) থেকে স্লিপ করে ১৫৭ টন ওজনের গার্ডারটি ভেঙে পড়েছে বলে দাবি করেছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় ৬০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সেতুর নির্মাণস্থল থেকে ২২ নম্বর গার্ডারটি মূল সেতুর পিলারের উপর স্থাপনের সময় তা উপর থেকে নদীর চরে পড়ে গিয়ে চার টুকরো হয়ে যায়। ঘটনার সময় ওই গার্ডারের উপরে থাকা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামও নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভেঙে পড়া গার্ডারটি নদীর চরে পড়ে ভেঙে চার টুকরো হয়ে গেছে। ভাঙা গার্ডারটি উৎসুক জনগণ যেন দেখতে না পারে সেজন্য সেতু নির্মাণ এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদেরও সেখানে প্রবেশে বাধা দিচ্ছেন এলজিইডি ও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন।

নির্মাণাধীন সেতু এলাকার অনেকে অভিযোগ করেন, শুরু থেকেই সেতুর কাজ চলছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে। নির্মাণ ত্রুটির কারণেই বারবার ভেঙে পড়ছে গার্ডার।

শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আল আমিন খান নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ক্রেন স্লিপ করেই মূলত দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এর সঙ্গে নিম্নমানের সামগ্রীর কোনো সম্পর্ক নেই।’

এদিকে, একই কথা বলেছেন, দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার সাধন কুমার সাহা।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সূত্র মতে, স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বৃহত্তর রংপুর-দিনাজপুরে গ্রামীণ যোগাযোগ ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্রের মাধ্যমে যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডাব্লিউএমসিজি-নাভানা গ্রুপ। ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ফুটপাতসহ সাড়ে ৯ মিটার প্রস্থের সেতুটি এলজিইডির অধীনে নির্মাণ করা হচ্ছে।

দেশে এলজিইডির অধীনে নির্মিত এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও রংপুরের গঙ্গাচড়ার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের অংশ হিসেবে নির্মিত হচ্ছে দ্বিতীয় সড়ক সেতুটি।

উল্লেখ্য, এর আগেও গার্ডার ভেঙে গিয়েছিল। নির্মাণাধীন সেতুটিতে এখন পর্যন্ত তিনটি গার্ডার স্থাপন করা হয়েছে। গত ১৫ নভেম্বর চতুর্থ গার্ডারটি (১৭ নম্বর) স্থাপনের জন্য মূল সেতুতে নিয়ে যাওয়ার সময় ক্রেনে তুলতেই সেটি নিচে পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়।



মন্তব্য চালু নেই