ফুলের জন্য ঝরলো ফুল

একটি ফুলের জন্যই ঝড়ে গেল আরেকটি ফুল। ফুল ছিঁড়ে ফেলায় অভিমান আর সেই অভিমান করেই না ফেরার দেশে চলে যায় ফুলের মতে মেয়ে তৃষা (১২)।
তৃষা পাবনা সদর উপজেলার তেলিগ্রামের নজরুল ইসলাম খানের মেয়ে। সে স্থানীয় নন্দনপুর দাখিল মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।
তার বাড়ির উঠানে কয়েকটি শখের ফুলগাছ আর তাতে ফুটেছিল বিভিন্ন ধরনের ফুল। সৌন্দর্য বর্ধন করা ওই ফুলে কেউ যদি হাত দেয়, তাহলে ভীষণ কষ্ট পায় তৃষা। সেই ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যাওয়ায় অভিমানে নিজেও ছেঁড়া ফুলের মতো চিরতরে প্রাণহীন হয়ে গেল।
শুক্রবার দিনে ছিল পাশের বাড়িতে অনুষ্ঠান। অনেক লোক এসেছিল নিমন্ত্রিত হয়ে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে নিমন্ত্রিতরা যাবার বেলায় ছিঁড়ে নিয়ে যায় তৃষার বাড়ির উঠনে শখের বাগান থেকে ফুল। রাতে ফুল হারানোর শোক সইতে না পেরে রাতের কোনো এক সময়ে তৃষা ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে চলে যায় না ফেরার দেশে।
দুবলিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আব্দুল মালেক জানান, শুক্রবার তৃষার বাড়ির সবাই এক বাড়িতে দাওয়াতে যায়। রাতে তৃষা বাড়িতে ফেরার পর গাছে ফুল দেখতে না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে সে ঘরের মধ্যে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দেয়। গভীর রাতেও মেয়ের তৃষার কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে ভোররাতে পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের খবর দেয়া হয়।
পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ আব্দুল মালেক জানান, খবর পেয়ে পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঘরের দরজা ভেঙে তৃষার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যাবার কারণেই অভিমানে আত্মহত্যা করেছে মেয়েটি। তারপরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তৃষার পরিবার ও একাধিক প্রতিবেশীর সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, তাদের প্রাথমিক ধারণা তৃষা ফুলের জন্যই আত্মহত্যা করেছে। কারণ ও ফুল খুব ভালোবাসতো। আর ভালোবাসতো বলেই বাড়ির আঙিনাতে কয়েকটি ফুলের গাছ লাগিয়ে নিবিড়ভাবে পরিচর্যা করতো। একটি ফুলের জন্যই এই অকাল মৃত্যু পরিবার এমনকি গ্রামের মানুষ মেনে নিতে পারছেন না। শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছে তৃষার পরিবার।



মন্তব্য চালু নেই