ফারাক্কা খুলে দেয়ায় উত্তাল পদ্মা, বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই

নিজ দেশের বন্যা ঠেকাতে ভারত ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিয়েছে। এর প্রভাবে পদ্মা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। নতুন করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও ভাঙনে পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীর কুষ্টিয়া হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রতি তিন ঘণ্টায় দুই সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে।

হঠাৎ করে পদ্মায় পানি বাড়ায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারি ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমূল হক বলেন, ‘যে হারে পানি বাড়ছে, তাতে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও জানান তিনি।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীতে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। সেখানে শুক্রবার দুপুর ১২টায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৪ দশমিক ০৬ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা থেকে মাত্র পয়েন্ট ১৯ সেন্টিমিটার দূরে রয়েছে পানি।

গত ১৮ আগস্ট এ পানির মাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার। ১৯ আগস্ট ছিল ১৩ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার।

সেখান থেকে গতকাল ২৫ আগস্ট ছিল ১৩ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। প্রতি তিন ঘণ্টায় দুই সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রধান শাখা গড়াই নদেও অব্যাহতভাবে পানি বাড়ছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমূল হক আরও জানান, বিহারে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ভারত ফারাক্কা বাঁধের দরজা খুলে দিয়েছে। এতে করে পদ্মা নদীতে পানি বেড়ে যাচ্ছে।

এদিকে বিগত কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙে পদ্মার পানি রাজশাহী পয়েন্টে বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গত এক সপ্তাহে পদ্মা নদীর রাজশাহী পয়েন্টে প্রায় ৯০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এখানে বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন রাজশাহীর পদ্মা পাড়ের মানুষ। নতুন করে দেখা দিয়েছে ভাঙন। প্লাবিত হচ্ছে পদ্মা পাড়ের নিম্মাঞ্চল।

এছাড়া পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে রাজশাহী নগরীর কয়েকটি এলাকার পদ্মার তীররক্ষা প্রকল্প কাজ। ইতিমধ্যে বুলনপুর এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের নিচে পদ্মার তীর রক্ষা প্রকল্পের চারটি স্থান সামন্য দেবে গেছে।

বালির বস্তা ফেলে মাটি ধরে রাখার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এ স্থানগুলো ধসে গেলে শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।



মন্তব্য চালু নেই