ফাইটার জেট ওড়াতে সক্ষম হলেন যে নারী
জ্যান শিউয়ারম্যান নামের এক ৫৫ বছর বয়সী পক্ষাঘাতগ্রস্ত নারী শুধুমাত্র নিজের চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে ফ্লাইট সিমুলেটরে ওড়াতে সক্ষম হন একটি এফ-৩৫ ফাইটার জেট এবং একটি সিঙ্গেল ইঞ্জিন সেসনা।
আমেরিকার Defence Advanced Research Projects Agency (DARPA) এর রেভলুশনাইজিং প্রস্থেটিকস প্রোগ্রামের আওতায় দুই বছর প্রশিক্ষণের পর পাওয়া যায় এই সাফল্য। মানুষ নিজের মস্তিষ্কের শক্তি ব্যবহার করে কতোদূর অগ্রসর হতে পারে তা বের করাই এই প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য ছিলো। কিন্তু শিউয়ারম্যান যা করতে সক্ষম হন তা ছিলো একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
শিউয়ারম্যান ২০০৩ সালে কোয়াড্রুপ্লেজিয়া নামক বংশগত জটিলতার কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ২০১২ সালে DARPA এর এই প্রোগ্রামে তিনি অংশ নেন। তার মস্তিষ্কের মোটোর করটেক্স (যে অংশটি হাতের নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করে) অংশে দুইটি ইলেকট্রোড সংযুক্ত করা হয়। প্রশিক্ষণের শুরুতে মস্তিষ্কের সাহায্যে একটি রোবোটিক হাত নিয়ন্ত্রণ করতে শেখেন তিনি।
ডান-বাম উভয় রোবোটিক হাত নিয়ন্ত্রণে তিনি পারদর্শী হয়ে ওঠেন। কিন্তু এরপর আরও কঠিন কিছু করতে চান তিনি। তিনি জয়েন্ট স্ট্রাইক ফ্লাইট স্টিমুলেটর ব্যবহার করে ওড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ যেভাবে জয়স্টিক ব্যবহার করতে পারে, তা করা তার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। এ কারণে শুধুমাত্র চিন্তাশক্তির সাহায্যে এই স্টিমুলেটর ব্যবহার করতে হয় তাকে। অ্যারোপ্লেন ওড়ানোর পুরো ব্যাপারটা কল্পনা করে তা নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।
এই ফলাফল নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ। অনেকেই ভাবছেন ভবিষ্যতে মানুষের মস্তিষ্ককে এভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে শারীরিক কোনও কষ্ট ছাড়াই ঝুঁকিপূর্ণ সব কাজ করা সম্ভব হবে। জ্যান শিউয়ারম্যানের মতো কোয়াড্রুপ্লেজিয়া, মোটর নিউরন ডিজিজ অথব লকড ইন সিনড্রোমের শিকার মানুষদের জীবনও আগের চাইতে অনেক সহজ হয়ে যাবে।
মন্তব্য চালু নেই