প্রস্তুত মঞ্চ : যে কোনো সময় ফাঁসি কার্যকর
মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে দু’টি ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শুক্রবার কাশিমপুর কারাগার-২ এর জেলার নাশির আহমেদ বিষয়টি জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী মীর কাসেমকে এর যে কোনো একটিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। এরইমধ্যে শুক্রবার ফাঁসির মহড়া দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারও (১ সেপ্টেম্বর) দেওয়া হয় মহড়া
এদিকে মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তার ফাঁসি কার্যকরে আর কোনও আইনি বাধা রইল না। এমনটাই জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
শুক্রবার দুপুরে মীর কাসেম রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানান। ফলে ফাঁসি কার্যকরের আগের সর্বশেষ আইনি প্রক্রিয়াটিও শেষ হয়েছে। এখন কারা কর্তৃপক্ষ যে কোনও সময় তার ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি মোখলেসুর রহমান বাদল।
তিনি বলেন, ‘ফাঁসি কার্যকরে এখন আর কোনও আইনগত বাধা নেই। জেল কোড অনুযায়ী যে কোনও সময় তার ফাঁসি কার্যকর করা যাবে। হয়তো কারা কর্তৃপক্ষ সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি মীর কাসেমের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তিনি চাইতেও পারেন, নাও চাইতে পারেন। এখানে কারা কর্তৃপক্ষ এবং তার সঙ্গেই কথা হয় কেবল। যেহেতু তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা না চাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন অতএব ফাঁসি কার্যকরে আর কোনও বাধা নেই।’
শুক্রবার বিকালে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, ‘মীর কাসেমের কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়টি শুক্রবার দুপুরে আবার জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, তিনি প্রাণভিক্ষা না চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
তবে কবে নাগাদ ফাঁসি কার্যকর করা হবে-সে বিষয়ে তিনি কোনও কিছু জানাতে পারেননি।
এদিকে, কাশিমপুর কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আপিলের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদন খারিজ হয়। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির রায় আপিল বিভাগ বহাল রাখেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে এই রায় দেন। ওইদিন সন্ধ্যায় রায়ের অনুলিপি কেন্দ্রীয় কারাগার, জেলা প্রশাসক, আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়। পরদিন কাশিমপুর কাগারে তাকে রায় পড়ে শোনানো হয়। এসময় তার কাছে কারা কর্তৃপক্ষ জানতে চায়, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবনে কিনা। মীর কাসেম তখন জানা, তিনি চিন্তা করে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার মীর কাসেমের কাছে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়া হলে তিনি পুনরায় সময় চান। পরে শুক্রবার দুপুরে তিনি জানান, প্রাণভিক্ষা চাইবেন না।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মন্তব্য চালু নেই