প্রবাসীদের সেবায় এবার বিদেশেই ডিজিটাল সেন্টার

পাসপোর্ট তৈরিসহ যাবতীয় সুবিধা নিতে দূর-দূরান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট দেশের রাজধানীতে অবস্থিত দূতাবাসে যেতে হয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের। কাজ ফেলে ছুটতে হয় বলে অনেক সময় বেতনও কাটা যায় তাদের। কয়েকবার যাতায়াতে বেশ খরচও হয়। প্রবাসীদের এ সমস্যা সমাধানে এবার দূতাবাস থেকে দূরবর্তী এলাকায় ডিজিটাল সেন্টার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

ইডিসি (Expatriates` Digital Center) নামে এ কেন্দ্র থেকে দূতাবাসে দেয়া যায় এমন সব সেবাই পাবেন প্রবাসীরা।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের আর্থিক সহায়তায় এটুআই (অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন) প্রজেক্টের কারিগরি সহায়তায় পাইলট প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। শুরুতে তিনটি দেশে মোট পাঁচটি ইডিসি স্থাপন করা হবে।

জানা যায়, বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিরাট অংশ মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে কর্মরত। তাই প্রাথমিকভাবে এ তিন দেশে ইডিসি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শুরুতে পাঁচটি সেন্টারের মাধ্যমে কী ধরনের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে অন্যান্য দেশেও ইডিসি স্থাপিত হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

এ প্রসঙ্গে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ জুলহাস বলেন, ‘আপাতত তিনটি দেশে পাঁচটি ইডিসি পাইলটিংয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সামনে এ বিষয়ের ওপর একটি ওয়ার্কশপ হবে। সেখানে সবাই কী কী মতামত দেন, এর ওপর নির্ভর করবে এর ধরন।’

সেন্টারগুলো দূতাবাস থেকে দূরে শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি- এমন সব এলাকায় ইডিসিগুলো স্থাপিত হবে বলে জানান তিনি।

মোহাম্মদ জুলহাস বলেন, ‘দূতাবাস থেকে অনেক দূরে প্রচুর বাংলাদেশি থাকে। তারা যদি পাসপোর্ট করতে চান তাহলে ইডিসি থেকেই অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। ওই কেন্দ্র থেকে তারা পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।’

তিনি বলেন, যেকোনো সমস্যায় পড়লে ওই দেশের বাংলাদেশি প্রবাসীদের আর কষ্ট করে দূতাবাসে আসতে হবে না। বাংলাদেশে যোগাযোগ করতে হবে না। ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব তারা কে কী সমস্যায় পড়েছেন। এরপর সমাধানও নিজস্ব নিয়মে হবে।

এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘শুধু পাসপোর্ট নয়, দূতাবাসে যেসব সার্ভিস দেয়া হয়, এর সবই ইডিসি থেকে প্রবাসীরা পাবেন।’

ইডিসি স্থাপনের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট দেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ বিষয়ে মালয়েশিয়া থেকে শাহজাহান সিরাজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এমআরপি করা বাধ্যতামূলক হওয়ায় আমি দূতাবাসে গিয়ে পাসপোর্ট করাতে চাইলাম। কিন্তু আমি মালয়েশিয়ার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করি। সেখান থেকে কুয়ালালামপুরে যাওয়া বাংলাদেশে যাওয়ার মতোই খরচ। সেটি বিবেচনা করে আমি দেশে গিয়েই পাসপোর্ট করিয়ে আনি। তবে সরকার যদি এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমাদের জন্য ইডিসি করে, তবে এমন ঝামেলা থেকে রেহাই পাব আমরা।’

প্রসঙ্গত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় প্রায় ৫০ লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। বৈধ কর্মীদের পাশাপাশি অবৈধ কর্মী থাকায় এ বিষয়ে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই।



মন্তব্য চালু নেই