প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় মক্কা-মদিনার দুই ইমাম

বাংলাদেশে সফরে আসা পবিত্র মক্কা ও মদিনার দুই ইমাম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ইসলামের প্রচার-প্রসারে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন তারা।

মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববির ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ বিন নাসির বিন মোহাম্মদ আল খুজাইমের নেতৃত্বে সফররত প্রতিনিধি দল বুধবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহ্সানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, বৈঠকে দুটি পবিত্র মসজিদের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সকল উপজেলায় মসজিদ কাম ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা প্রদানে সৌদি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। ড. মোহাম্মদ আল খুজাইম বিগত আট বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, আমাদের ধারণা হচ্ছে, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ একটি পরিবর্তিত দেশ। দেশটি এখন খুবই ভালো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এই দুই সৌদি অতিথি যথাক্রমে মোহাম্মদ আল খুজাইম এবং আবদুল রহমান আল কাশিমকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আপনারা এখানে আসায় আমরা খুব খুশি হয়েছি। মক্কা এবং মদিনা দুটি পবিত্র স্থান। আমাদের হৃদয়ে এর বিশেষ স্থান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সাইদকে অভ্যর্থনা জানাতে বাংলাদেশ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। জবাবে আল খুজাইম বলেন, সৌদি বাদশা বাংলাদেশের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর সফর কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে আলোচনা চলছে।

সৌদি আরবের দুটি পবিত্র মসজিদের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসলামের প্রচার ও প্রসারে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পদক্ষেপের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা মুসলমানদের এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য অনেক কিছু করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ কর্মকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মোহাম্মদ আল খুজাইম বলেন, সৌদি আরবও অন্যান্য দেশের ন্যায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তিনি বিশ্বের সব মুসলিম দেশ শান্তিতে বসবাস করবে বলে আশা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তিনি চান বাংলাদেশের সব ধর্মের লোক তাদের মৌলিক প্রয়োজন পূরণের মাধ্যমে তারাও শান্তিতে বসবাস করবে।

প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে সৌদি আরবে কর্মরত বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা দুটি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। তিনি বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগত সম্পর্ক রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এই সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম সবচেয়ে উত্তম ধর্ম এবং শান্তি, মানবতা ও সংহতির ধর্ম। সন্ত্রাসীরা তাদের বিভিন্ন সন্ত্রসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এই শান্তির ধর্মকে ক্ষতি করছে। প্রধানমন্ত্রী ইসলামের প্রচার ও প্রসারে তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, সরকার প্রতিটি উপজেলায় মসজিদ কাম ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করবে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই একটি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আরও উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসির চৌধুরী, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আল মুতাইরি অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

এই দুই সৌদি অতিথি ও ইমাম আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ওলামা মাশায়েখ ও আলেম উলামাদের মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪২তম প্রতিষ্ঠা বাষির্কী উপলক্ষে এই মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই