প্রতিবন্ধী নারীকে গণধর্ষণের পর জোরপূর্বক বিয়ে !

গাজীপুরের কালিয়াকৈর মোথাজুরি এলাকায় এক প্রতিবন্ধী নারীকে (৩০) গণধর্ষণের পর জোরপূর্বক এক নিরীহ যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ধর্ষণের শিকার ওই প্রতিবন্ধী নারী এবং জোর করে বিয়ে দেওয়া যুবক আফসার আলী (১৮) সোমবার কালিয়াকৈর থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ওই প্রতিবন্ধী নারী এবং তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া যুবক থানায় এসে অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, মোথাজুরি গ্রামের মো. ইদ্রিস আলীর ছেলে নইম (২০), একই গ্রামের মো. শহিদের ছেলে মেহেদী (২০) ও মো. রুমেজ উদ্দিনের ছেলে রনি (১৯) প্রতিবন্ধী ওই নারীকে কয়েক দিন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ওই নারী গর্ভবতী হয়ে পড়েন। বিষয়টি জানাজানি হলে গত শনিবার গ্রাম্য সালিস বসে। সালিসকারীরা আফসার আলী (১৮) নামে এক দিনমজুর যুবককে মারপিট করে জোরপূর্বক নির্যাতিত ওই প্রতিবন্ধী নারীর সঙ্গে বিয়ে পড়িয়ে দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।

ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট জাকির হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি ওই সালিস বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। পরে পরিষদের জরুরি এক কাজে সালিস ছেড়ে চলে আসি। সর্বশেষ কি হয়েছে তা আমি জানি না।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ এবং পরে ১২ বছরের কম বয়সী যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের কাজী নোয়াব আলী বিয়ে পড়ানো প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি নিজে বিয়ে পড়াতে যাইনি। আমার সহকরী মোফাজ্জল হোসেন আমার হয়ে কাবিন সম্পন্ন করেন। আর বিয়ে পড়ান ওই গ্রামের মসজিদের ইমাম।’

তবে সালিস বৈঠকে উপস্থিত হারুন অর রশিদ (৫০) ও আইনজীবী গোলাম রাব্বি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বৈঠকে প্রতিবন্ধী ওই নারী ও বিয়ে দেওয়া যুবকের কোনো বক্তব্য শোনা হয়নি। আমরা তাদের বক্তব্য শুনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের কথাও শোনা হয়নি।

তারা অভিযোগ করেন, প্রকৃত ধর্ষকদের বিচার না করে নিরীহ ছেলেকে ধরে এনে প্রতিবন্ধী ওই মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।



মন্তব্য চালু নেই