পৌর নির্বাচন : টিভি চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজ চেয়েছে ইসি

সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম ও সংঘর্ষের যে সব ভিডিও ফুটেজ টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার করা হয়েছে সেগুলো দেখতে চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এ জন্য সংশ্লিষ্ট ২১টি টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক/হেড অব নিউজকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এ সব ফুটেজ দেখে কতটুকু ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা সংশয় প্রকাশ করেছেন।

ইসির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এর আগে সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও সংসদ নির্বাচনে গণমাধ্যমের রিপোর্ট দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি নির্বাচন কমিশন। উল্টো মিডিয়ার রিপোর্টকে অতিরঞ্জিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া পৌর নির্বাচনের বিভিন্ন ফুটেজ দেখে কোনো ব্যবস্থা নেবে এমনটি মনে করেন না তারা।

সম্প্রতি ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ২১টি টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক/হেড অব নিউজের নিকট পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশেষ করে টেলিভিশন চ্যানেলে পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণের খবরসহ নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। এ সব খবরের মধ্যে কিছু অনিয়ম ও সংঘর্ষের খবরও রয়েছে যা সংশ্লিষ্ট আইনানুসারে পদক্ষেপের দাবি রাখে। এ লক্ষ্য টেলিভিশন চ্যানেলসমূহে ভোটগ্রহণের দিনে যেসব অনিয়মের ভিডিও চিত্র প্রচারিত হয়েছে তার কপি প্রয়োজন।

চিঠিতে বলা ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি ৩ (২) অনুসারে ‘কমিশন এই বিধিমালার অধীন উহার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদান করিবার উদ্দেশ্য রাষ্ট্রের যে কোন ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারিবে এবং অনুরুপভাবে নির্দেশিত হইলে, উক্ত ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ উক্ত নির্দেশিত দায়িত্ব পালন বা উক্তরুপ সহায়তা প্রদানে বাধ্য থাকিবে।’

চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘উল্লিখিত অবস্থায় ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পর্কিত অনিয়ম ও সংঘর্ষের ভিডিও কপি জরুরি ভিত্তিতে সরবরাহের জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো।’

যেসব টেলিভিশনকে ভিডিও ফুটেজ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে সেগুলো হলো- এটিএন বাংলা, চ্যানেল আই, এনটিভি, বাংলা ভিশন, একুশে টিভি, চ্যানেল ২৪, যমুনা টেলিভিশন, সময় টেলিভিশন, বৈশাখী টেলিভিশন, এটিএন নিউজ, আরটিভি, দেশ টেলিভিশন, মাছরাঙা টেলিভিশন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন, গাজী টেলিভিশন, এসএ টিভি, চ্যানেল-৯, দীপ্ত টেলিভিশন, এশিয়ান টিভি, মোহনা টিভি ও মাইটিভি।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৪ পৌরসভায় ভোট হয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২০টি দল এবারের পৌর নির্বাচনে অংশ নেয়। এতে আওয়ামী লীগের ২৩৪, বিএনপির ২২৩ ও জাতীয় পার্টির ৭৪ প্রার্থীসহ ৯৪৫ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। এরমধ্যে ১৯টি পৌরসভায় অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে ৫১ ভোটকেন্দ্র স্থগিত করা হয়। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ে। এ ছাড়া অনেক পৌরসভায় অস্বাভাবিক ভোট পড়ে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।



মন্তব্য চালু নেই