পায়ের গোড়ালিতে ব্যাথা হলে কি করবেন?

আল্লাহ প্রদত্ত মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রয়েছে সুষ্পষ্ট পার্থক্য এবং আলাদা আলাদা কাজ। নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাকে ছাড়া অচল হয়ে যায় মানবদেহের প্রায় পুরোটাই। তেমনি একটি গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ হচ্ছে পা। আমাদের চলাফেরায় নিয়ত পা ব্যবহার হলেও আমরা এর গুরুত্ব তখনি টের পাই,যখন কোনরূপ ব্যাথা কিংবা আঘাতে পা নিশ্চল হয়ে পড়ে। এই অতীব প্রয়োজনীয় অঙ্গের সুস্থতায় মেনে চলতে পারেন কিছু সুনির্দিষ্ট তরিকা। সে সম্পর্কেই আলোকপাত করছি..

মানবদেহের পায়ের প্রধান দু’টি অংশ হলো গোড়ালি ও পায়ের পাতা। পায়ের গোড়ালিতে যেসব কারণে ব্যথা হয় তার মধ্যে ক্যালকেনিয়ান স্পারই বেশি দায়ী। তা ছাড়া পায়ে কোনো আঘাত লাগলে বা পায়ের হাড় ভেঙে গেলে ব্যথা হয়। ক্যালকেনিয়ান স্পার থেকে অনেক সময় প্রদাহ হয়ে প্লাস্টার ফাসাইটিস হতে পারে। তা ছাড়া গেঁটেবাত, ওস্টিওমাইলাইটিস, স্পন্ডাইলো অর্থোপ্যাথি ইত্যাদি রোগে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। তবে বয়স বাড়লে ক্যালকেনিয়ান স্পার বা কাটার কারণেই বেশি হয় পায়ে ব্যথা।

কি করে বুঝবেন :

* পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে সাধারণত হাঁটলে সেটা আরও বেড়ে যায়।

* গোড়ালি কখনো কখনো ফুলে যেতে পারে।

* খালি পায়ে শক্ত জায়গায় হাঁটলে সাধারণত ব্যথা বেশি বাড়ে।

* প্লাস্টার ফাসাইটিস হলে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা সকালে বেশি থাকে এবং তা বেলা বাড়ার সাথে সাথে একটু কমে আসে।

* কখনো কখনো গোড়ালি শক্ত শক্ত মনে হয়।

* শক্ত জুতা ব্যবহার করলেও ব্যথা বেড়ে যায়।

কি করবেনঃtimthumb

* সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধ যেমন­প্যারাসিটামল, ইন্ডোমেথাসিন, নেপ্রক্সিন ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে। প্রয়োজন অনুসারে ফিজিক্যাল থেরাপি, যেমন­ মোম থেরাপি, হাইড্রোথেরাপি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।

* জুতার পরিবর্তন যেমন­ নরম সোল ব্যবহার করা, আর্চ সাপোর্ট দেয়া, গোড়ালির কাছে ছিদ্র করে নেয়া ইত্যাদি।

* কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপারেশন করে ক্যালকেনিয়ান স্পার বা কাটা কেটে ফেলতে হয়।

যেগুলো অবশ্যই মেনে চলবেনঃ

* সব সময় নরম জুতা ব্যবহার করবেন।foot-pain

* শক্ত স্থানে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না বা হাঁটবেন না।

* ভারী কোনো জিনিস, যেমন­বেশি ওজনের বাজারের থলি, পানিভর্তি বালতি ইত্যাদি বহন করবেন না।

* সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাতে সাপোর্ট দিয়ে ধীরে ধীরে উঠবেন ও নামবেন এবং যথাসম্ভব গোড়ালির ব্যবহার কম করবেন।

* ব্যথা বেশি থাকা অবস্থায় কোনো প্রকার ব্যায়াম নিষেধ।

* হাই হিল জুতা ব্যবহার করা নিষেধ।

* মোটা ব্যক্তিদের শরীরের ওজন কমাতে হবে।

* মালিশ ব্যবহার করবেন না।

শুধুমাত্র পায়ের গোড়ালির ব্যাথায় আক্রান্ত একজন নয়, সুস্থ একজন মানুষেরও এই নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত। তাতে হয়তো আপনার চলাফেরার অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ বেচে যাবে যেকোন প্রকার অনিষ্ট থেকে।



মন্তব্য চালু নেই