পাবনার মাধপুরের ১৭জন শহীদ যোদ্ধার স্মরণসভায় যোগ দিলেন ভূমি মন্ত্রী
ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এম.পি. বলেছেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দান থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা শুনে এসে ৭১ এর ২৯ মার্চ আমাদের যা কিছু ছিল তা নিয়ে পাক সেনাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ি। কিন্তু আমরা ১৭ জনকে হারালাম পাবনার মাধপুরের যুদ্ধে।
পাবনার দাপুনিয়া ইউনিয়নের মাধপুর ঐতিহাসিক বটতলায় শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর নেতৃত্বে পাকসেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ১৭ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এ কথাগুলো বলেন।
জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলনের পর মন্ত্রী মাধপুর বটগাছ তলায় একটি বটগাছের চারা রোপন করেন।
ভূমি মন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, প্রতিবছর ২৯ মার্চ আমি দাপুনিয়ার মাধপুরের ঐতিহাসিক বটগাছের তলায় ১৭ জন শহীদের স্মৃতি রোমন্থন করতে এখানে আসি। এখানে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে একটি স্মৃতিসৌধ গড়ে তোলার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। এছাড়া সম্প্রতি মাধপুর বটগাছ সংলগ্ন স্থানে স্মৃতিসৌধের জন্য ১০ কাঠা জমি কিনে নিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা সেদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ডাকে সাড়া দিয়েই পাক সেনাদের উপর আমরা আক্রমণ চালিয়েছিলাম। উল্লেখ্য, ২৮ মার্চ পাক আর্র্মির সাথে পাবনা পুলিশ ও জনগণের তুমুল যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পাক সেনারা নিহত আহত ও বিধ্বস্ত হয়। পাকসেনাদের পরাজয়ের খবর পেয়ে রাজশাহী থেকে একটি পাক সেনা বহর পাবনার দিকে বিধ্বস্ত ও আহত পাকসেনাদের রিকভারির জন্য আসছিল।
পাকসেনাদের বহরটি তাদের আহত সৈন্যদের পাবনা থেকে উদ্ধার করে দাশুরিয়া ও বনপাড়া হয়ে রাজশাহী যাওয়ার এরকম কথা জনমুখে শোনার পর তৎসময়ে পাকশীর মাঠে বসে বর্তমান ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর নেতৃত্বে ছাত্র নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার জনতা তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা নিয়ে তীর-ধনুক, দেশীয় বন্দুক অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে পাক সেনাদের উপর অতর্কিত হামলার জন্য পাকশি থেকে শাহপুরের ভিতর দিয়ে পাবনার দাপুনিয়ার মাধপুরে এসে পৌঁছান। পাক সেনা বহরের আগমন দেখে তারা ঐতিহ্যবাহী মাধপুরের বটগাছ তলায় পজিশন নেয়। সেখানে পাক সেনাদের ভারী অস্ত্রের মুখে তাদের দেশীয় অস্ত্র ও হাতের তৈরি বোমা তুচ্ছ হয়ে পড়ে। পাকসেনাদের মটার সেল ও ভারী অস্ত্রেও গোলায় শত শত মানুষ আহত হয় এবং তাৎক্ষণিক ১৭ জন শহীদ হন।
মুক্তিযোদ্ধা লাবু সরদারের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে পাবনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, ঈশ্বরদী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান বিশ্বাস, ঈশ্বরদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুর রাজ্জাক, পাবনা জেলার মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আঃ বাতেন, ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিসুন্নবী বিশ্বাস, পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধার ডেপুটি কমান্ডার-২ আঃ লতিফ শেলী, সহকারী কমান্ডার আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের নেতা রশীদ উল্লাহ ও মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম সেন্টু বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য চালু নেই