‘পাঠ্যক্রম পাল্টাতে হবে কওমি মাদ্রাসাকে’

কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজ বা আরবির মাস্টার্সের সমমানের ঘোষণা দেয়ার পর এর পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, এ জন্য তিনি একটি কমিটিও করেছেন।

বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষদের সঙ্গে টেলিকনফারেন্সে বক্তব্য দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

কওমি মাদ্রাসার ডিগ্রির স্বীকৃতির দাবি নিয়ে ২০০০ সালের আগে থেকেই সোচ্চার মাদ্রাসাকেন্দ্রীক রাজনৈতিক দলগুলো। ওই বছর বিএনপি ও আদর্শিক ‘শত্রু’ জামায়াতের সঙ্গে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রীক দলগুলো জোটবদ্ধ হয় এই স্বীকৃতি পাওয়ার আশ্বাসেই।

২০০৬ সালে জোট সরকারের মেয়াদ শেষের আগে আগে সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতির ঘোষণা দিলেও দলগুলো তা প্রত্যাখ্যান করে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবার এই স্বীকৃতির বিষয়টি সামনে আসে এবং আলেমদের মুরুব্বি হিসেবে পরিচিত আহমেদ শাহশফীসহ আলেমদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী। পাঠ্যক্রম ঠিক করে সরকারের কাছে জমা দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত নেতারা এই পাঠ্যক্রম দিতে পারেননি। আর স্বীকৃতির উদ্যোগও আর আলোর মুখ দেখেনি।

গত মঙ্গলবার দিতে আহমেদ শাহশফীর নেতৃত্বে আলেমরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কওমি মাদ্র্রাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দেয়ার ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাত্র কয়েকদিন আগে আমি কওমি মাদ্রাসার স্বতন্ত্র, বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে এবং দারুল উলুম দেওবন্দের মূল নীতির ওপর ভিত্তি করে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস স্নাতকোত্তর সনদকে মাস্টার্স ইন ইসলামিক স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যারাবিক এর সমমান প্রদান করার ঘোষণা দিয়েছি। কমিটি করে দিয়েছি। তাদের কারিকুলাম ঠিক করে তারা যেন তা করতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ও করে দিয়েছি। সব ধর্মের মানুষ যেন তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে, সে উদ্যোগ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে মর্যাদার সঙ্গে। এটাই আমাদের নীতি। এটাই আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা না। সকলেই ধর্ম পালন করবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইসলামের ভালো দিকগুলোতো আমাদের গ্রহণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আজকে ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ হত্যা করা-এটা তো আমার ধর্ম কখনও বলেনি। কোরআনের আয়াত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোরআনে স্পষ্ট বলা আছে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা যায় না। কিন্তু তার পরও কীভাবে এই হত্যাকাণ্ড চালায়, আমি জানি না। আমরা এটাই চাই, এই ধরনের আত্মঘাতী পথ থেকে আমাদের ছেলেমেয়েরা ফিরে আসুক। ইসলামের মূল বাণী যেন তারা উপলব্ধি করতে পারে। মহানবী (সা.) এর নির্দেশনা যেন মেনে চলে-এটাই আমরা চাই।’



মন্তব্য চালু নেই