পরমাণু কৌশলে বাংলাদেশে ধানের উৎপাদন তিনগুণ বেড়েছে

ধানের নতুন জাত ব্যবহার ও পারমাণবিক কৌশলের সহায়তায় বাংলাদেশ গত কয়েক দশকে ধানের উৎপাদন তিন গুণ বৃদ্ধি করেছে। আর এই কারণেই দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরও বাংলাদেশ বিশ্বে একধাপ এগিয়ে রয়েছে। আজ বাংলাদেশে চালের নিরাপদ এবং স্থিতিশীল সরবরাহ রয়েছে। বাংলাদেশ এখন চাল আমাদানিকারক দেশ থেকে রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ধান উৎপাদন নিয়ে এসব কথা তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএসইএ)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং আইএইএ’র সহায়তায় বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বীনা) উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল বিভিন্ন জাতের ধানের মধ্যে অন্যতম বীনা-৭। যেহেতু বাংলাদেশে এই ধান কৃষক ও শ্রমিকদের সাহায্য করেছে। তাই এটি জনপ্রিয় ধানের জাত হিসেবে পরিচিত হয়েছে। এটা চাষ করে কৃষকদের আয় স্থিতিশীল হয়েছে।

এই ধানের চাষ করে লাভবান হওয়ার কথা আইএইএকে জানান ময়মনসিংহের কৃষক সুরুজ আলী। তিনি বলেন, আগের সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে বলতে পারি আমি পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত উৎপাদনের পরেও এখন দ্বিগুণ আয় করছি। আমি এখন টাকাও জমাতে পারছি, কারণ পোকামাকড়ের জন্য অতটা স্প্রে করতে হয় না।

বীনা-৭ ধান কম সময়ে অধিক ফলনশীল। আগে স্থানীয় বীজে প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হতো ২ টন বা তার কিছু বেশি। আর এতে সময় লাগতো ১৫০ দিন। বীনা উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৩ দশমিক ৫ থেকে ৪ দশমিক ৫ টন পর্যন্ত। সময় লাগে ১১৫ দিন।

বীনার হিসাব অনুযায়ী ২০০৭ সালে তাদের প্রথম প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী বীনা-৭ উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারী ২০ শতাংশের বেশি মানুষের জীবিকা উন্নত করতে সাহায্য করেছে।

বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩৬ মিলিয়ন টনের বেশি ধান উৎপাদিত হয় এবং এটা চতুর্থ বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ। দেশটি এখন নিয়মিতভাবে ওই অঞ্চলে চাল রফতানি করে থাকে।

এই নতুন জাতের ধান পানির সংকট, খরা, মাটির লবণাক্ততা ও মাটির ক্ষয়সহ নানা সমস্যার মধ্যেও বেঁচে থাকতে সক্ষম।

তবে এই আশার মধ্যেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কিছু শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

শুধু বাংলাদেশের ধানই নয়, উদ্ভিদ মিউটেশন ব্রিডিং কৌশল ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী ৩ হাজারের অধিক উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের উন্নতি করা হয়েছে। বিশ্বের জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি এবং পরিবেশ আরো চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠায় বৈশ্বিক খাদ্য চাহিদা মেটানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন অব্যাহত রাখবে এই মিউটেশন ব্রিডিং কৌশল।

সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতিরেস বলেছেন, এর মাধ্যমে তারা দুর্ভিক্ষ এবং বিশ্বব্যাপী বৃহৎ সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।



মন্তব্য চালু নেই