পবিত্র আশুরা আজ

আজ ১০ মহররম পবিত্র আশুরা । মুসলিম বিশ্বে এ দিনটি ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

মহররম মাসের ১০ তারিখ বা আশুরা ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে ঐতিহাসিক কারবালার সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার কারণে। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দের ১০ মহররম হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য, হক ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে আত্মত্যাগে এবং আত্মোৎসর্গের যে অপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, তা পৃথিবীর মানুষকে যুগ যুগ ধরে ন্যায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রেরণা জুগিয়ে আসছে ।

শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের সুমহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে অনুপ্রেরণা যোগায়। সত্য ও সুন্দরের পথে চলার প্রেরণা যোগায়।

আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, `ফিরে এলো আজ সেই মহররম মাহিনা, ত্যাগ চাই, মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না।` কবির এ উচ্চারণে আশুরায় ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর হওয়ার তাগিদ লক্ষ করা যায়।

আশুরার মাহাত্ম্য সম্পর্কে হাদিস শরিফে বিশদ বর্ণনা রয়েছে। রমজানের সিয়াম ফরজ হওয়ার আগে প্রিয় নবী (সা.) নিজে এবং তার নির্দেশে সাহাবায়ে কেরাম আশুরায় সিয়াম পালন করতেন। এমনকি পরবর্তী সময়ে এ সিয়াম পালিত হয়। নবী করিম (সা.) বলেছেন, রমজানের সিয়ামের পর উত্তম সিয়াম হচ্ছে আশুরার সিয়াম।

আশুরায় সিয়াম পালন করা যেমন ভালো কাজ, তেমনি দরিদ্রজনকে খাওয়ানোটাও সওয়াবের কাজ। এ দিন পরিবার-পরিজনকে খাওয়ানোর জন্য উত্তম খাবার ব্যবস্থা করায়ও কল্যাণ রয়েছে।
আশুরা শব্দটি মূলত আরবি ‘আশারা’ শব্দ থেকে এসেছে। ‘আশারা’ অর্থ দশ। মহররম মাসের ১০ তারিখ এ জন্য আশুরা হিসেবেও পরিচিত।

এই ১০ মহররম আশুরার দিন মহান আল্লাহতায়ালা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আবার কেয়ামতও হবে এ দিন। এর বাইরে এদিন হজরত ইব্রাহিম (আ.) নমরুদের অগ্নিকুন্ড থেকে রক্ষা পেয়েছেন, হযরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পান। এরকম অসংখ্য ঘটনায় তাৎপর্যমন্ডিত এদিন।

মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হবে। আজ সরকারি ছুটির দিন। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সোমবার পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক আজ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। আজ সংবাদপত্র অফিসগুলোতে ছুটি পালিত হবে। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলেও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই