পদ্মা সেতু রেল প্রকল্প ফাস্ট ট্র্যাক তালিকায়

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প যুক্ত হচ্ছে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ তালিকায়। গুরুত্ব বিবেচনায় ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটির পরবর্তী সভায় তা উপস্থাপন করা হচ্ছে। পদ্মার উপর দিয়ে ২০১৮ সালের মধ্যে একসঙ্গে সড়ক ও রেলপথ চালু করতে চায় সরকার। এজন্য রেল সংযোগ প্রকল্পটিও দ্রুত বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং টাস্কফোর্স সভা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে।

এর সাথে রূপপুর, রামপাল, মাতারবাড়ি বিদ্যুত্ কেন্দ্র, মেট্রোরেল ও গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ আরো দ্রুত করতে গঠন করা হচ্ছে প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফান্ড, সংশোধন হচ্ছে ভূমি সংক্রান্ত আইন। একইসাথে প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করতে এর নির্দেশনাতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ফাস্ট ট্র্যাকে অগ্রগতি যেমন রয়েছে তেমনি এতে ধীরগতিও রয়েছে। এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের কাজ এগুচ্ছে ধীরে। অন্যদিকে মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পে উত্তরায় অস্থায়ী কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড স্থাপনে রাজউকের অনুমোদনসহ মিরপুর সেনানিবাসের কিছু অংশে নির্মাণ কাজ বিষয়ক সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে।

জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকারের অগ্রাধিকার বিবেচনায় পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, সেনাদিয়া ও পায়রা সমুদ্রবন্দর, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র, মাতারবাড়ি ও রামপাল বিদ্যুত্ কেন্দ্র প্রকল্পগুলো ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের তালিকায় নিয়ে আসা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠন করা হয় ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটি যার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ১৬ জুন। চলতি বছরের শুরুতে এ কমিটির চতুর্থ বৈঠক হবার কথা রয়েছে। মনিটরিং কমিটির নির্দেশনা এগিয়ে নিয়ে যেতে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়। এ টাস্ক ফোর্সের ৭ম সভা চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয়।

সভা সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিটি। এ প্রকল্পে জাজিরা প্রান্তে এপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৫৬ শতাংশ, মাওয়া প্রান্তে এপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ হয়েছে ৬৪ শতাংশ। মূল সেতুর কাজ হয়েছে ১৯ শতাংশ। নভেম্বর পর্যন্ত ৩৩ শতাংশ আর্থিক অগ্রগতির কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি গুরুত্ব বিবেচনায় ফাস্ট ট্র্যাক তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণের জন্য পরবর্তী মনিটরিং কমিটির সভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অন্যান্য প্রকল্পের অগ্রগতির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ৪টি চুক্তির মধ্যে ১ম ও ২য় চুক্তির মাঠ পর্যায়ের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। অন্যান্য চুক্তির কাজ চলমান রয়েছে।

রামপাল বিদ্যুত্ কেন্দ্র: এ প্রকল্পের স্থানে মাটি ভরাট কাজ, সীমানা প্রাচীর, সংযোগ সড়ক, ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এ অঞ্চলে রেলওয়ে সংযোগ ও সাইটের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ব্যারাক স্থাপন প্রয়োজন বলে সভায় জানানো হয়েছে।

মাতারবাড়ি বিদ্যুত্ কেন্দ্র: এ প্রকল্পটির জন্য ১৫শ একর জমি অধিগ্রহণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ হয়েছে। পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য এনজিও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অন্যান্য কাজ চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পটিরও অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে সভায় উল্লেখ করা হয়েছে।

সোনাদিয়া ও পায়রা সমুদ্র বন্দর: সীমিত আকারে পায়রা সমুদ্রবন্দর চালু করতে কাজ এগিয়ে চলছে। ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে এ বন্দর পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হবে। গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনে চীন, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক ও ভারতের প্রস্তাব পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, প্রকল্প অনুমোদন সহজ করাসহ অনুমোদন প্রক্রিয়ার সময় কমিয়ে আনতে সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতি বিষয়ক নির্দেশিকাটিতে ইতিমধ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। এটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের লক্ষ্যে আগামী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে। অন্যদিকে প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফান্ড গঠনের কর্মপন্থা নির্ধারণের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইত্তেফাক।



মন্তব্য চালু নেই