পণ্য পরিবহন ধর্মঘটে নাকাল ব্যবসায়ীরা

পণ্যবাহী যানবাহনের বাম্পার অপসারণের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ১২ দফা দাবিতে দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলায় চলছে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট। সোমবার ভোর থেকে ধর্মঘট পালন করছে পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদ। গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ওই ধর্মঘট কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিএ) গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এক আদেশে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের সাইড অ্যাঙ্গেল, বাম্পার ও হুক অপসারণ করার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়।

এই পরিবহন ধর্মঘটের আওতায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলা, বরিশালের ছয় জেলা ও বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলা রয়েছে।

পণ্যবহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ধর্মঘটে পরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ায় রাজধানী ঢাকা ও বিভিন্ন জেলায় পণ্য পরিবহন করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রতিনিধিরা।

ধর্মঘটের ফলে সোমবার সকাল থেকে খুলনা নগরী এবং ২১ জেলায় ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে নগরীর ঘাট এলাকা থেকে সড়কপথে পণ্য পরিবহন হচ্ছে না।

খুলনা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ধর্মঘটে খুলনা বিভাগের সব চেয়ে বড় সোনাডাঙ্গা ট্রাক টার্মিনালসহ এসব জেলার বিভিন্নস্থানে আটকা পড়েছে পণ্যবাহী হাজারও ট্রাক।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম বক্স দুদু এ প্রতিবেদককে বলেন, রোববার পর্যন্ত আল্টিমেটাম থাকলেও তাদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে তারা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার থেকে সকল পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে জ্বালানি তেলবাহী ট্যাংকলরিও ধর্মঘটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা জানান, পরিবহনে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই না করতে প্রেস নোট জারি, অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন, ওয়েব্রিজে জরিমানা বাতিল, ১২ হাজার টাকা স্কেল জরিমানা প্রত্যাহার, ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি ও অনিয়ম বন্ধ, কাগজপত্র পরীক্ষার নামে হয়রানি বন্ধ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ, ব্রিজের টোল কমানো, অপ্রয়োজনীয় স্পিড ব্রেকার অপসারণ, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, জ্বালানি তেলের দাম কমানো, ভারতের পেট্রোপোল বন্দরে চালকদের নির্যাতন বন্ধ ও গত বছর সীতাকুণ্ডু থানায় ৪শ’ জন ট্রাক চালকের নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে তারা এ ধর্মঘট পালন করছেন।

সংগঠনের আহ্বায়ক আব্দুল গফফার বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের দাবি অত্যন্ত ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত। আমরা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও সেদিকে তারা নজর দেয়নি। যে কারণে অনির্দিষ্টকালের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি। দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।’



মন্তব্য চালু নেই