নৌযান বন্ধ তবু ক্ষোভ নেই যাত্রীদের

সকাল থেকে রাজধানী ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রী সাধারণ জেলার শিবচরের কাওড়াকান্দি ঘাটে এসে পৌঁছায়। লঞ্চ-স্পিডবোট-ফেরিসহ নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা যেতে পারছে না হাজার হাজার যাত্রীরা। তবে এই পরিস্থিতিতে কারো মুখে নেই কোনো হতাশার চিহ্ন বা ক্ষোভ। বরং আনন্দ-উচ্ছ্বাসের একটা বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে যাত্রীদের চোখে-মুখে।

শনিবার সকালে কাওড়াকান্দি ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে এ চিত্র। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে আজকের এ চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।

আজ বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের শুভ সূচনা হতে যাচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মাসেতুর মূল কাজের শুভ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগমন উপলক্ষ্যে নিরাপত্তার স্বার্থেই নৌচলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, দূর-দূরান্ত থেকে ঘাটে এসে পদ্মা পার হতে না পারায় কোনো ক্ষোভ প্রকাশ করছে না যাত্রীরা। তদের মতে, আজ এতো বড় একটা কাজের শুভ সূচনা হতে যাচ্ছে আর নিরাপত্তার স্বার্থে নৌরুট কিছু সময় বন্ধ রাখা হলে কোনো সমস্যা নেই। বৃহৎ স্বার্থে অনেক কিছুই ছাড় দিতে হয়। আর এরকম মন্তব্য ঘাটে অবস্থানরত অনেক যাত্রীরই।

মাদারীপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে আসা যাত্রী বোরহান ফকির বলেন, ‘ঢাকা যাওয়ার জন্য খুব সকালে বাড়ি থেকে রওনা দেই। সকাল নয়টা কাওড়াকান্দি ঘাটে এসে দেখি নৌযান চলাচল বন্ধ। এখন আবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। আজ আমার মতো অসংখ্য যাত্রীদের মনে কোনো ক্ষোভ নেই। কারণ স্বপ্নের পদ্মাসেতুর মূল কাজ শুরু হতে যাচ্ছে আজ।’

বরিশাল থেকে আসা অপর এক যাত্রী মাহবুব হোসেন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের সমস্যায় নৌরুট বন্ধ হয়েছে। ঘাটে এসে পুনরায় বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে বিরক্তির বোঝা নিয়ে। অথচ আজকে কোনোরূপ বিরক্তি প্রকাশ পায়নি। মন থেকেই এটা আসেনি। পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে, আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়নের জন্য এতটুকু কনসিডার আমরা করতে পারি।’

দূর থেকে আসা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের যাত্রীদের অপেক্ষার সময়টুকু এখন শুধু কাটছে পদ্মাসেতু নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার গল্প করে। যাত্রীদের অনেকেই জানান, বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষার সময়টা আজ বিরক্ত নিয়ে নয়, আনন্দের সাথেই কাটবে তাদের।’

বিআইডব্লিউটিসির কাওড়াকান্দি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া নৌরুট বন্ধ থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেননি। তিনি জানান, সকালে কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। কুয়াশা কেটে গেলে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ফেরি চলাচল শুরু করে।’



মন্তব্য চালু নেই