নূর হোসেনের কারণেই সেলিব্রেটি ‘নীলা’

জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা। নারয়ণগঞ্জের সাত খুন মামালায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নূর হোসেনের ‘বান্ধবী’ খ্যাত ও স্ত্রী দাবিদার। মিডিয়া ও নূর হোসেনের কারণে তিনি এখন সেলিব্রেটি হয়েছেন বলে দাবি করে বলেছেন, ‘আমি মিডিয়ার কারণে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, তেমনি আবার মিডিয়ার কারণে সেলিব্রেটি হয়েছি। দেশে-বিদেশে আজ অনেকে চেনে আমাকে। লন্ডনে আমার আজ অনেক ফ্রেন্ড-শুভাকাঙ্খী সৃষ্টি হয়েছে।’

নীলা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেসনের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সাবেক মহিলা কাউন্সিলর। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নির্বাচনের কিছুদিন পর থেকেই ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেনের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। তার স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন মহলে প্রভাব বিস্তার ছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতা এবং প্রশাসনের অনেক কর্তা ব্যক্তির সঙ্গেও সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। এ নিয়ে স্বামী সায়েমের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিলে ২০১৩ সালের ২৫ জুন তাদের ডিভোর্স হয়।

সাত খুন মামলায় সোমবার রায় ঘোষণার পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাতে এক প্রতিক্রিয়ায় নীলা বলেন, ‘উপার্জনক্ষম মানুষগুলো হারিয়ে পরিবারগুলো এখন পথে বসে পড়েছে। আমি অন্তর থেকে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি, নুর হোসেনসহ সবার শাস্তি কার্যকর চাই।’

তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু মিডিয়া লেখে আমি নাকি নুর হোসেনের রক্ষিতা। বিয়ের পর একজন স্ত্রী কীভাবে স্বামীর রক্ষিতা হয়? নুর হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে দাবি করে এর সাক্ষীও হাজির করেন নীলা। বলেন, ‘নুর হোসেনের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে এটা নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধি, সংসদ সদস্য, কাউন্সিলরসহ নারায়ণগঞ্জবাসী সবাই জানে। বিয়ের পর একজন নারী কীভাবে কারো রক্ষিতা হয় সেটা আমার প্রশ্ন।’

তবে সাত খুন ঘটনার সময় নূর হোসেনের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না বলে দাবি করে নীলা তাদের সম্পর্ক ভাঙার পূর্বাপর তুলে ধরেন- ‘২০১৩ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছোট নজরুল ও বিএনপির এক নেতাকে মারধর করেন নুর হোসেন ও তার ক্যাডাররা। তার পর থেকে নুর হোসেনের সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একপর্যায়ে ভুলে যাই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কথা। এভাবে আস্তে আস্তে দূরত্ব তৈরি হয় নুর হোসেনের সঙ্গে আমার।’

নুর হোসেনের সঙ্গে তার সম্পর্কের ছাড়াছাড়ি হয়েছে কি না-এমন প্রশ্ন এড়িয়ে নীলা বলেন, ‘২০১৩ সালের পর থেকে তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’ তবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে কি না তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল দাবি করেন জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা। বলেন, ‘নজরুল কাকা আমার বিয়েতে উকিল হয়েছিল। আমার মা-বাবা নজরুল কাকাকে নিজের ছেলের মেতো ভালোবাসত। আমার সাথে নজরুল কাকার খুব চমৎকার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু নুর হোসেনের কারণে নজরুল কাকার পরিবারের সাথে আমার সম্পর্কের অবনতি হয়। আর যুবলীগ নেতা ছোট নজরুল ও বিএনপির এক নেতার কারণে নুর হোসেনের সাথে সম্পর্ক ভেঙে যায়।’

সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সাবেক নারী কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা গত বছরের মে মাসে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা জুয়েল হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। প্রায় দুই মাস পর জামিনে মুক্তি হন তিনি।

এর আগে গত ১৮ মে নীলাকে সাত হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নূর হোসেন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের পর তাকে ছেড়ে দেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।



মন্তব্য চালু নেই