নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের খবর জানিয়েছে ভারত
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি অানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে জানিয়েছে ভারত। এছাড়া নূর হোসেনের বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে আরো তথ্য চেয়েছে দেশটি।
বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
উর্দু স্পিকিং পিপলস ইয়্যুথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্টের সদস্যরা কুর্মিটোলা ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ করে নয়জন ও পুলিশের গুলিতে একজনকে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে যায়। এসময় সাংবাদিকরা প্রতিমন্ত্রীর কাছে নূর হোসেনের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
গত ১৪ জুন রাতে কলকাতার বাগুইআটিতে ভিআইপি রোডের ধারে একটি বহুতলের ফ্ল্যাট থেকে নূর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে সল্টলেক কমিশনারেটের অ্যান্টি টেরোরিস্ট সেল ও বাগুইআটি থানা পুলিশ। এ সময় তার দুই সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন রোববার দুপুরে তাকে বারাসাতের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে আটদিনের পুলিশ হেফাজতে দেন। বাগুইয়াটি থানার পুলিশের দায়ের করা অনুপ্রবেশ, অস্ত্র আইন ও জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগের মামলায় এ রিমান্ড দেয়া হয়।
নূর হোসেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সাহায্য নেয়া হয়। পরে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে কাউন্সিলর (প্যানেল মেয়র) নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম একসঙ্গে অপহৃত হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন নজরুল ইসলামের স্ত্রী। মামলায় কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান করে মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়।
গত ৩০ এপ্রিল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয় জন এবং ১ মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সবারই হাত-পা বাঁধা ছিল। পেটে ছিল আঘাতের চিহ্ন। প্রতিটি লাশ ইটভর্তি দু’টি করে বস্তায় বেঁধে ডুবিয়ে দেয়া হয়। গত ৩ মে নূর হোসেনের সিদ্ধিরগঞ্জের বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার এবং রক্তমাখা মাইক্রোবাস জব্দ করে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় আরো বেশ কয়েকজনকে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র্যাব-১১ এর কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেন নিহত প্যানেল মেয়র নজরুলের পরিবারের সদস্যরা। নজরুল ইসলামের শ্বশুর অভিযোগ করেন, ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র্যাবকে দিয়ে ওই সাতজনকে হত্যা করিয়েছেন নূর হোসেন। এরপর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন।
গত ১০ মে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
মন্তব্য চালু নেই