নিহত জঙ্গি হিরন পুলিশ হত্যা ও হোসেনী দালানে হামলায় ‘জড়িত’

রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় বুধবার মধ্যরাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যে দুই জঙ্গি সদস্য নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য হত্যা এবং হোসেনী দালানে বোমা হামলায় জড়িত ছিল। তিনি হলেন জামায়াতুল মুজাহিদিনের (জেএমবি) ঢাকা অঞ্চলের নতুন কমান্ডার কামাল ওরফে হিরন (৩২)। নিহত অপর জঙ্গি সদস্য নোমান ওরফে আবদুল্লাহ (৩৫) ছিলেন ঢাকা অঞ্চলের অপারেশনাল কমান্ডার। অভিযানে আরো তিনজন আটক হয়েছে, যাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

ডিবির দাবি, হাজারীবাগের শিকদার মেডিকেল কলেজ এলাকায় এ গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। নিহত দু’জনই গাবতলী ও আশুলিয়ায় পুলিশ চেকপোস্টে হামলা চালিয়ে পুলিশ সদস্য হত্যা এবং হোসেনী দালানে বোমা হামলায় জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি অস্ত্র ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

ডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেলে করেই আশুলিয়ায় পুলিশ চেকপোস্টে হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা করা হয়েছিল।

ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ও বোমা নিয়ষ্ক্রয়কারী দলের প্রধান ছানোয়ার হোসেন জানান, ‘মিরপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যরাতে কামরাঙ্গীরচর থেকে তিন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ডিবিকে জানায়, হাজারীবাগে শিকদার মেডিকেল কলেজের সামনে রাতে তাদের সঙ্গে দুই জেএমবি নেতার সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

সে অনুযায়ী গ্রেপ্তার তিন জেএমবি সদস্যকে নিয়ে সেখানে অভিযানে যায় ডিবি। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই জঙ্গি পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। পুলিশও গুলি ছুড়লে দু’জন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আটককৃত তিন জঙ্গির নাম ও পরিচয় জানাননি ছানোয়ার হোসেন।

ডিবি জানায়, গত ২৫ নভেম্বর রাজধানীর গাবতলীর দ্বীপনগর এলাকায় ঢাকা ডিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন জেএমবির অন্যতম সামরিক কমান্ডার শাহাদত ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা। এর কিছুদিন পরই হিরন জেএমবির ঢাকা অঞ্চলের সামরিক কমান্ডারের দায়িত্ব পান। সম্প্রতি রাজধানীসহ আরও কয়েকটি এলাকায় জেএমবির অপারেশনে সরাসরি জড়িত ছিলেন হিরন।

আশুলিয়া চেকপোস্টে পুলিশ হত্যার ঘটনায় কিলিং মিশনে মাহফুজের সঙ্গে অংশ নেন তিনি। ওই অপারেশনের হিরন অস্ত্র বহন করেন। ওই হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি হাজারীবাগে অভিযানের সময় জব্দ করা হয়েছে। দুটি অগ্নেয়াস্ত্রও পাওয়া গেছে। তবে এই অস্ত্রের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশুলিয়ার হত্যা ছাড়াও গাবতলীতে চেকপোস্টে পুলিশ হত্যা, কামরাঙ্গীরচর ও মিরপুরে জেএমবির আস্তানা ও পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিলের আগে বোমা হামলায় জড়িত ছিলেন হিরন। কয়েকজন জেএমবির নেতাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তার নাম উঠে আসে। রাতে অভিযানে আটক তিন জেএমবি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানায় ডিবি সূত্র।

ডিমএপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মারুফ হাসান সরকার বলেন, ‘নিহত দুইজনই জঙ্গি সদস্য। এর মধ্যে কামাল ওরফে হিরন গাবতলী ও আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল।’বাংলামেইল



মন্তব্য চালু নেই