নিখোঁজ সেই বাংলাদেশি ছাত্র ইন্দোনেশিয়ায়?

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরে এক শিক্ষার্থী রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

প্রায় এক বছর আগে ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সহপাঠীদের সাথে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়েছিলেন ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান। সেখানে আরও কয়েকজন বন্ধুর সাথে গোসলে নেমে নিখোঁজ হন তিনি সহ আরও পাঁচজন। খবর বিবিসি বাংলার

সাব্বিরের বাবা হাসানুর রহমান ও মা সেলিনা আক্তার এখন বলছেন, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে তাদের সন্তানও রয়েছেন।

তাদের এ দাবির মূল ভিত্তি হলো ঢাকার কয়েকটি সংবাদপত্রে ওই অভিবাসীদের প্রকাশিত একটি ছবি।

সাব্বিরের মা সেলিনা আক্তার বিবিসিকে পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি এটিই আমার ছেলে। ২৪ বছর ১ মাস ওকে দেখেছি, ওকে পেটে ধরেছি, আমি চিনবোনা? ও এভাবেই ঘরে শুয়ে থাকতো।’

সাব্বির হাসানের মা যে ছবিটিকে সাব্বির হাসানের বলছেন সেখানে দেখা যাচ্ছে একটি আশ্রয় শিবিরে একজন লুঙ্গি পরিহিত ব্যক্তি শুয়ে আছেন। এটিই সাব্বির কি-না সেটি সম্পর্কে এখনো কোন ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি।

সাব্বিরের সহপাঠীদের কয়েকজন জানিয়েছেন সাব্বিরসহ মোট ৩৪ জন সেন্ট মার্টিনে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে দুজনের মৃতদেহ ওই সময়ই উদ্ধার করা হয়। দুইদিন পর পাওয়া যায় আরও দুইজনের মৃতদেহ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন খোঁজ পাওয় যায়নি সাব্বির হাসান ও ইশতিয়াক বিন মাহমুদের।

সাব্বিরের বাবা সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হাসানুর রহমান বলেছেন, তার ধারণা সাব্বির সেখানে অপহরণের শিকার হয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ওখানে অনেক দুষ্কৃতিকারী রয়েছে। এমনও শোনা গেছে যে উদয়কে (ইশতিয়াক বিন মাহমুদের ডাক নাম) নিয়ে যাচ্ছিলো দেখে সাব্বির গিয়ে প্রতিবাদ করেছে। পরে দুজনকেই মারধর করে নিয়ে গেছে। শোনা কথা, বাই দা বাই।’

তিনি আরও বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বলেছি আমার ছেলে অসুস্থ। আপনার খালি গায়ে ছেলেটার খোঁজ নেন।

হাসানুর রহমান জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাকে জানানো হয়েছে উদ্ধারকৃতদের মধ্যে চারশ’র মতো ব্যক্তির একটি তালিকা বাংলাদেশের কর্মকর্তারা পেয়েছেন কিন্তু তার মধ্যে সাব্বিরের নাম নেই।

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একটি ডেস্কের দায়িত্বে থাকা মহাপরিচালক আশুদ মাহমুদ বলেছেন, প্রায় ছয়শ’ অভিবাসীর একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরীক্ষা করে দেখছে যে আদৌ তাদের মধ্যে কোন বাংলাদেশি রয়েছে কি-না।

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখছে উদ্ধারকৃতরা বাংলাদেশি কি-না। কোনভাবেই বিষয়টা দৃষ্টির অগোচরে থাকবেনা।

এদিকে সাব্বিরের বন্ধুদের অনেকেই উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের ওই ছবির সাথে সাব্বিরের ছবি দিয়ে ফেসবুক সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন করছে পরিবারের দাবিটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য।

ফেসবুকে এমন একটি ছবির নীচে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাব্বিরের বিষয় খোজ নেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই