নারায়ণগঞ্জে সাত খুন: ঘুরে ফিরে গডফাদার প্রসঙ্গ

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় ঘুরে ফিরে গডফাদার প্রসঙ্গ উঠে আসছে সেখানকার প্রায় সকলের মুখে মুখে।
নূর হোসেন নিজের যোগাযোগে র‌্যাবকে দিয়ে সাত খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে, নাকি তাকে দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে- তার চেয়েও প্রভাবশালী কেউ, সেই প্রভাবশালীকে বাঁচাতেই নূর হোসেনকে রিমান্ডে নিতে পুলিশের এত গরিমসি- এ আলোচনা এখন নারায়ণগঞ্জে মানুষের মুখে-মুখে।

সাত খুনের মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাখাওয়াৎ হোসেন খান বলেন, ‘দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা (এটর্নি জেনারেল) মাহবুবে আলম বলেছেন- ‘পুলিশ ওইদিন সাত খুনের মামলায় নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারত। সেক্ষেত্রে পুলিশ সম্পূরক বা নতুন চার্জশিট দিতে পারত।’ পুলিশ এটি করেনি। কারণ তার পেছনে একজন বেশ প্রভাবশালী গডফাদার ও তার চক্র রয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ আব্দুর রহমান বলেন, ‘যেখানে সাত খুনের ঘটনায় র‌্যাবের একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলসহ তিন কর্মকর্তা আইনের আওতায় আসল, সেখানে যদি গডফাদার এর পেছনে থেকে থাকেন, তিনি কেন আইনের আওতায় আসবেন না? নূর হোসেন কেন অপহরণের ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে গিয়ে একজন সংসদ সদস্যের সঙ্গে দেখা করল? এই সংসদ সদস্য কেন জনৈক গৌঢ় বাবুর মাধ্যমে নূর হোসেনকে কলকাতায় পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন? নূর হোসেন কার নির্দেশে হত্যাকাণ্ড ঘটালো, কীভাবে টাকা বিতরণ করলো- এ সব জানতে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের বিকল্প নেই।’

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, সাত খুনের ঘটনায় নূর হোসেনকে রিমান্ডে নেওয়ার সুযোগ নেই। এ মুহূর্তে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তাধীন নেই।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ শহরের কাছ থেকে পৌর কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাত জন নিখোঁজ হয়। এর তিনদিন পর সাত জনেরই মৃতদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া যায়।

এই ঘটনায় আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে দুটি মামলা করা হয়। অভিযোগ করা হয়, নূর হোসেনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে তার প্রতিপক্ষকে খুন করেছে র‌্যাব।

মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কর্মকর্তা মেজর (অব) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব) এম এম রানাকে গ্রেপ্তার করে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলার আরেক আসামি নূর হোসেন পালিয়ে ভারতে গেলেও সেখানে ধরা পড়েন। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই