নব্য জেএমবি প্রধান মুসার উত্থান যেভাবে

রাজশাহীর বাগমারার গণিপুর ইউনিয়নের বজ্রকোলা গ্রামের মাঈনুল ইসলাম। গ্রামে তাকে সবাই এ নামেই চেনেন। মুসা তার সাংগঠনিক নাম। ২০০৪ সালের এপ্রিল থেকে বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে রাজশাহী অঞ্চলের বাগমারা, নওগাঁর আত্রাই, রাণীনগর, নাটোরের নলডাঙ্গায় অভিযান শুরু করলে মুসা জেএমবিতে যোগদান করেন। বয়সে ছোট হওয়ায় সে সময় প্রশাসনের নজরে আসেনি মুসা। সেই মুসাই এখন নব্য জেএমবি’র প্রধান।

২০০৪ সালে মুসা বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর ডিগ্রী কলেজের এইচএসসির প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাবার নাম আবুল কালাম মোল্লা। তিনি স্থানীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ছিলেন। অল্প কিছুদিন আগে তিনি মারা গেছেন। মুসার মায়ের নাম সুফিয়া বেগম।

মুসার গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুরুল আলম বলেন, বাংলাভাইয়ের আমলেও মঈনুল জেএমবির সঙ্গে জড়িত ছিল। সে সময় তার সঙ্গে বাড়িতে কিছু অপরিচিত লোকজন আসতো। তবে যারা আসতো দু’তিনদিন থাকলেও তারা বাড়ির বাহিরে বের হতো না। তাই কিছু বোঝা যেত না।

মুসার মা সুফিয়া বেগম জানান, গত ৮ মাস আগে মুসা বজ্রকোলা গ্রামে এসেছিলো। সৌদি আরব যাবে বলে ৩ লাখ টাকার জমি বিক্রি করে বাড়ি থেকে চলে যায়। সেই চলে যাওয়াই শেষ। তার কোনো যোগাযোগ হয়নি মুসার সঙ্গে। তবে, সেই সময় বাড়িতে থাকা তার ছবিসহ বেশ কিছু কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলেছিলেন মুসা।

তিনি বলেন, মুসা ঢাকার উত্তরায় একটি ভবনের ৬ তলায় থাকতো। সেখানে কয়েকবার গেছেন তিনি। ওই ভবনেই মেজর জাহিদ নামের একজন থাকতো। মেজর জাহিদ ছিল দুই তলা। মুসার সঙ্গে মেজর জাহিদের ঘনিষ্ঠতা বেশী ছিল। মাঝে মধ্যে কিছু লোকজনও আসতো সেই বাড়িতে।

বাংলাভাইয়ের আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর মুসাও কিছুদিন আত্মগোপনে ছিল। এরপর সে আবার এলাকায় ফিরে আসে। এইচএসসি পাশ করার পর সে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হয়। পরে সেখান থেকে বদলি নিয়ে ঢাকা কলেজে চলে যায়। এরপর সেখান থেকে পাশ করার পর উত্তরার লাইফ স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।

মুসা আড়াই বছর আগে একই উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঁইপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের মেয়ে তৃষ্ণামনি নামে এক নারীকে বিয়েও করেন।

মুসার মা সুফিয়া বেগম জানান, টেলিভিশনে দেখে আমি ছেলের জঙ্গি হওয়ার ঘটনা জানতে পারি। মেজর জাহিদসহ কিছু লোকজন তাদের বাড়ির ছাদে মিটিং করতো। কিন্তু কি মিটিং করতো তখন বুঝিনি। এখন বুঝতে পারছি আসলেই তারা জঙ্গির মিটিং করতো।



মন্তব্য চালু নেই