‘দোয়া করবেন বাবা আমি লিবিয়া থেকে ইটালি যাচ্ছি’
লিবীয় উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ২৪ জন বাংলাদেশির মধ্যে রয়েছেন নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার গোলাম মাওলা টুনু। দালালের মাধ্যমে অবৈধ পথে অন্য সবার মতো তিনিও লিবিয়া থেকে ইটালি যাচ্ছিলেন।
নিখোঁজ ২৪ জনের লাশ পাওয়া না গেলেও তারা কেউ আর জীবিত নেই বলে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে। তবে তাদের ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বেঁধে আছে পরিবারগুলো।
নিখোঁজ গোলাম মাওলা টুনু (৩০) সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের চিলাদী গ্রামের গোলাম ছারোয়ারে ছেলে। পাঁচ ভাই ও চার বোনের মধ্যে টুনু তৃতীয়। তার দ্ইু বছরের একটি ছেলে রয়েছে।
সোমবার সকালে কথা হয় টুনুর বাবা গোলাম ছারোয়ারে সঙ্গে। তিনি জানান, পরিবারের স্বচ্ছলতা আনতে ২০১৩ সালের এপ্রিলে লিবিয়া যায় টুনু। সেখানে সে রং মিস্ত্রির কাজ করতো। সর্বশেষ গত ১৪ আগস্ট দুপুরে বাড়িতে ফোন করে টুনু বলে, ‘বাবা, দোয়া করবেন, সবাইকে দোয়া করতে বলবেন, আমি লক্ষ্মীপুরের দালাল আব্দুল কাদেরের মাধ্যমে সাগরপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে ইতালি যাচ্ছি।’
ছানোয়ার মিয়া আরো বলেন, গত ১৯ আগস্ট বুধবার রাতে টুনুর সহকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারি টুনুসহ ৩১২ জন যাত্রী নিয়ে ভূমধ্যসাগরে তাদের নৌকাটি ডুবে গেছে। নিহত ৫০ জন যাত্রীর মধ্যে টুনুও রয়েছে। তবে টুনুর লাশের কোন সন্ধান তারা জানাতে পারেনি।
নিখোঁজ গোলাম মাওলা টুনুর স্ত্রী রাবেয়া আক্তার আঁখি জানান, গত ১০ আগস্ট রাতে সর্বশেষ তার তার সঙ্গে মোবাইলে টুনুর কথা হয়। কিন্তু ওই সময় সে ইতালি যাওয়ার কথা তাকে কিছু বলেনি। এখন তিনি শুনতে পাচ্ছে সাগরপথে ইতালি যাওয়ার সময় তার স্বামী নিখোঁজ রয়েছেন।
টুনুর সঙ্গে নৌকায় ছিলেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের কাবিলপুর গ্রামের ফখরুল ইসলাম মুন্না (২৬)। তিনিও নিখোঁজ রয়েছেন। তার পরিবারেও চলছে শোকের মাতম।
লিবিয়া থেকে সাগরপথে ইতালি যাওয়ার সময় গত ৪ আগস্ট ভূমধ্যসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের অমরপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে আশরাফুল আমিন জসিম (৩২)। এখনো তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য চালু নেই