দেশে বর্তমানে পাঁচ হাজারের বেশি অনলাইন পত্রিকা পরিচালিত হচ্ছে!
বর্তমানে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে পাঁচ হাজারেরও বেশি অনলাইন পত্রিকা পরিচালিত হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় এসব অনলাইন পত্রিকার কোন রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন হয় না। তবে অনেকে সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স ও জয়েন্ট স্টক থেকে লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন নিয়ে অনলাইন মিডিয়া চালাচ্ছেন। দৈনিক জনকণ্ঠে দেশের অনলাইন পত্রিকা সম্পর্কে এমনই এক ভয়ঙ্কর চিত্র উঠে এসেছে রশিদ মামুনের প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানান হয়, গত বছরের শেষ এবং চলতি বছরের শুরুতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং নির্বাচন ইস্যুতে জামায়াত শিবির সাতক্ষীরায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালায়। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে খবর রটে আন্দোলন দমাতে সরকার ভারতীয় বাহিনীকে অপারেশনে নামিয়েছে। এ অপারেশন পরিচালিত হয়েছে যৌথবাহিনীর সহায়তায়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লীর কাছে এ সেনা সহায়তা চেয়ে চিঠি দেয়। খোদ ঢাকার দুটি সংবাদ মাধ্যম এই খবর প্রকাশ করে।
জনকণ্ঠ তাদের প্রতিবেদনে জানায়, চীনে ৬৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বলে দেশটির সরকারী এক সংস্থার বরাত দিয়ে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। চায়না ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার (সিএনএনআইসি) জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত অন্তত একবার হলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন এমন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে এক কোটি ৪০ লাখ। মূলত মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানায় সিএনএনআইসি। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, গত ছয় মাসেই এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৫২ কোটি ৭০ লাখ। বলা হচ্ছে চীনে এখন মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬৩ কোটি ২০ লাখ, যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার দ্বিগুণের কিছু বেশি। এ বছর ভারতীয় ২৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এ সংখ্যা ২০ কোটি ৭০ লাখ। বাংলাদেশে মোট তিন কোটি ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এর মধ্যে মেবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা তিন কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ হাজার। অন্যদিকে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি ৬৮ লাখ ৭১ হাজার। জুলাই মাস পর্যন্ত গ্রাহক সংখ্যার এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। জুন মাসের চেয়ে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা তিন লাখ ১৮ হাজার বেড়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে মোবাইলের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ ৭৭ হাজার বৃদ্ধি পেল। গত ডিসেম্বরে দেশে মোবাইলফোন ব্যবহারকারী ছিল ১১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৪ হাজার। ক্রমান্বয়ে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইসব দিক বিবেচনা করে বলা যেতে পারে বাংলাদেশেও অনলাইন সংবাদ মাধ্যম অনলাইন টেভিভিশন এবং রেডিওর ভাল বাজার তৈরি হতে পারে। কিন্তু শুরুতেই পাঠক এবং দর্শক বিভ্রান্ত হলে, ধাক্কা খেলে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
পত্রিকাটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৭৪ সালে প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। সেটির নাম ছিল নিউজ রিপোর্ট। এরপর পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন সংবাদপত্র তাদের অনলাইন সংস্করণ চালু করে। তবে সত্যিকারের অনলাইন সংবাদের ক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয় সাউথপোর্ট রিপোর্টার। এটি ২০০০ সালে যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত হয়। সে তুলনায় বাংলাদেশে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের যাত্রা কিছুটা পরে।
জনকণ্ঠ জানায়, বাংলাদেশে যারা ভাল করছেন তারা প্রশংসার দাবিদার কিন্তু যারা শুধুই অপপ্রচার চালাচ্ছেন প্রশ্ন উঠেছে তাদের ঠেকাবেন কে? ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নিজস্ব বিশ্লেষণেও এরা পিছিয়ে নেই। সব সময় রাজনীতি নয়, ব্যক্তিগত চরিত্রহানিতেও এরা পিছিয়ে নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনলাইনভিত্তিক সংবাদপত্রের রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর থেকে অনলাইন মিডিয়ার রেজিস্ট্রেশনসহ নীতিমালার বিষয়ে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়। কী কী কারণে রেজিস্ট্রেশন জরুরী তা ওই চিঠির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে জানানোও হয়েছে। এর পর ‘অনলাইন গণমাধ্যম সহায়ক নীতিমালা’ প্রণয়নে প্রধান তথ্য কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের ২০ জানুয়ারি কমিটি পুনর্গঠন হয়। কমিটিকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি মোস্তফা জব্বারকে আহ্বায়ক করে একটি উপ-কমিটি গঠনও করা হয়। ইতোমধ্যে সেই কমিটি একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
মন্তব্য চালু নেই