দেশে পাতি নেতাদের দাপট বাড়ছে : সেতুমন্ত্রী

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ এখন নেতা উৎপাদনের কারখানা। দেশে এখন হরেক রকমের নেতা। আতি নেতা, পাতি নেতা, সিকি নেতা, আধুলি নেতা, দেশের সর্বত্রই তাদের দাপট বাড়ছে।

শুক্রবার দুপুরে রাজশাহীতে বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুর আগে নেতাকর্মীদের স্লোগান সহজভাবে নেননি ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এটা একটা ডিজিটাল মেলা। এটা কোনো রাজনৈতিক সভা নয়, সমাবেশ নয়, র্যালি নয় এবং রাজনৈতিক কোনো আলোচনা সভাও এটি নয়। কাজেই এখানে রাজনৈতিক স্লোগান দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’

এসময় তার মন্তব্যে হাততালি দেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। এরও সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যারা স্লোগান দেয়, তারাই আবার হাততালি নেয়। সব কিছুতেই আছি, এ হুজুগ থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। যে আসরের যেই গান সেই গানই গাইতে হবে।’

মঞ্চে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে ফুল দেয়ারও সমালোচনা করেন সেতুমন্ত্রী।

নেতাকর্মীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই মঞ্চটা আলাদা। এর আয়োজক রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার। কাজেই এটি প্রশাসনিক বিষয়। অহেতুক প্রশাসনকে রাজনৈতিক বিতর্কে জড়ানোর দরকার নেই। এটি একটা স্বচ্ছ বিষয়, পরিষ্কার বিষয়, এটা একটা ভিশন, একটা মিশন, কাজেই এটি ওই ভাবেই দেখতে হবে।

ব্যানার-পোস্টারে নেতাদের ছবি ছাপানোরও সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যে ডিজিটাল ছবিগুলো দেখলাম, বঙ্গবন্ধু-নেত্রী ছোট-ওপরে। তারপর ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহমুদ এরপরে আরেকটু বড়। তারপর যার সৌজন্যে এ বিলবোর্ড তিনি অনেক বড়। তাহলে তিনি নিজেকে প্রচার করার জন্য বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের এসব নাম ব্যবহার করেছেন। এগুলো আমাদের জানতে হবে, শিখতে হবে। এসময় তিনি দেশে কর্মী উৎপাদনে মনযোগ দেয়ার কথা জানান।

ডিজিটাল বাংলাদেশ একটি নিঃশব্দ বিপ্লব উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ভালোই বিপ্লব হচ্ছে। বড় ধরনের বিপ্লব হচ্ছে। এটা এতোটা দৃশ্যমান না। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা বিশাল বিপ্লব হচ্ছে।

ই-ভোটিং নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মতামত নিয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়ার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যা-ই করে, বিএনপির একটাই কথা, মানি না, মানবো না। অথচ ই-ভোটিং একটি আধুনিক প্রযুিুক্ত। গত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এ পদ্ধতির পরীক্ষামূলক ব্যবহার হয়েছিল। সেখানে বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করেছিলেন।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও নগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাইমুজ্জামান মুক্তা, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান প্রমুখ।

রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মুনির হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) সুলতান আব্দুল হামিদ। পরে অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, মেলায় বসেছে সরকারি ও বেসরকারি দফতরের ৬৫টি স্টল। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য এটি উন্মুক্ত থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই