দেশেই তৈরি হচ্ছে শিশু পর্নোছবি!

ইন্টারনেটের উন্মুক্ত জগতে শিশুপর্নো নিয়ে সারা বিশ্বেই তোলপাড় চলছে। এসব ওয়েবসাইট ফিল্টার করার উপায় নিয়ে কাজ করছে গুগল ও মাইক্রোসফটসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠান। ইউরোপ ও আমেরিকার সরকারগুলো এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এসব খবর ইন্টারনেটের কল্যাণে কমবেশি সবার জানা। কিন্তু বাংলাদেশেই যে এমন ছবি নির্মাণ করা হয় এ তথ্য নিশ্চয় পিলে চমকানোর মতো! শুধু তা-ই নয়, ছেলে শিশুদের দিয়ে তৈরি এসব পর্নো ছবি বিক্রি করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। চড়া মূল্যে কিনে নিচ্ছে বিদেশি ইন্টারনেটভিত্তিক ক্রেতারা।

আর্ন্তজাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি এরকমই একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে। এরা ছেলে শিশুদের দিয়ে পর্নোছবি নির্মাণ করে ইন্টারনেটে বাণিজ্য করে আসছিল। এ চক্রের হোতা তথাকথিত শিশুসাহিত্যিক টিপু কিবরিয়া (৩৫) ও তার দুই সহযোগীকে পর্নো ছবি তৈরির সময় হাতেনাতে আটক হয়েছেন। আটক অপর দু’জন হলেন- নুরুল ইসলাম এবং শাহারুল ইসলাম।

গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মুগদা থেকে তাদের আটক করে সিআইডি সাইবার ক্রাইমের একটি দল। এসময় এক শিশু ও পর্নো ছবির শতাধিক সিডি-ডিভিডিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

সিআইডি জানিয়েছে, এ ঘটনায় মুগদা থানায় একটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে হাজির করে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এর আগে তাদেরকে এক দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, প্রায় ১৫ দিন আগে ইন্টারপোল থেকে বাংলাদেশে শিশু পর্নোগ্রাফির বিষয়ে অবগত করা হয়। এরপর অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে সিআইডির সাইবার ক্রাইমের একটি দল। গত মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে নিজস্ব পর্নোস্টুডিও থেকে টিপু কিবরিয়া ও আপত্তিকর অবস্থায় তার সহযোগী নুরুল আমিনকে আটক করে। এসময় তের বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। স্টুডিও এবং টিপুর খিলগাঁওয়ের তারাবাগের ১৫১/২/৪২ নম্বর বাড়ির বাসা থেকে শতাধিক পর্নো সিডি, ৭০টি লুব্রিকেটিং জেল, ৪৮ পিস আন্ডার ওয়ার, স্টিল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, সিপিইউ, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। টিপুর দেয়া তথ্য মতে তার কমিশনভোগী সহযোগী শাহারুলকে গতকাল বুধবার গোড়ান থেকে আটক করা হয়।

আশরাফুল ইসলাম আরো জানান, টিপুর প্রকৃত নাম টি আই এম ফকরুজ্জামান। তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেদের নিয়ে ওই স্টুডিওতে পর্নোছবি তৈরি করেন এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে তা বিক্রি করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টিপু জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে এ ধরনের পর্নো সিডি তৈরি ও বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেটের বিভিন্ন পে ওয়েবসাইটে বিক্রি করে আসছেন। এই বিক্রির টাকা তিনি ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে গ্রহণ করতেন। ইতোমধ্যে শতাধিক ছেলে শিশুকে দিয়ে পর্নো ছবি তৈরি করেছেন এবং তা বিক্রি করে অঢেল অর্থ রোজগার করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই