দুর্গাপুরে মহান মে দিবস উদযাপন

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন মে দিবস। ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, সোনার বাংলা গড়ে তুলি’ এই প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় দুর্গাপুরে পালিত হয়েছে মহান মে দিবস।

সকাল ১০টায় জাতীয় শ্রমিকলীগ দুর্গাপুর শাখা, মটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও নির্মান শ্রমিক ইউনিয়ন প্রথক ভাবে বিভিন্ন কর্মসুচীর মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করেছে শ্রমীকলীগ আয়োজিত দুর্গাপুর অডিটরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টারে বাবু শীতল সরকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জনাব ছবি বিশ্বাস, অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা করেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক খান, পৌর মেয়র শ.ম জয়নাল আবেদীন, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি আব্দুল্লাহ্ হক প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে শিশুদের এক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিরিশিরি মটর শ্রমীক ইউনিয়ন কার্যালয়ে জনাব তারা মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অপরদিকে এম.কে.সি.এম স্কুল মাঠে নির্মান শ্রমিক ইউনিয়ন ও সিএনজি চালক শ্রমিক ইউনিয়ন এর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আলোচনা সভা, কালো ব্যাজ ধারন কর্মসুচী পালন করা হয়।

প্রধান অতিথি বলেন, ১৮৮৬ সালের এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমজীবী মানুষ সব শিল্পাঞ্চলে আট ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেন। শহরের হে মার্কেট হয়ে ওঠে তাদের বিক্ষোভ স্থল। শহরের তিন লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলনে শরিক হন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা লাল ঝান্ডা হাতে নেমে আসে রাজপথে। এ সময় শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। প্রাণ হারান ১০ শ্রমিক। রক্ত ঝরার পরেও শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন যেন আরো তীব্র হয়ে ওঠে। অব্যাহত থাকে ধর্মঘট। ৩ মে শ্রমিক সভায় পুলিশের নির্বিচার গুলিতে প্রাণ হারায় আরো ছয় শ্রমিক। শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে ৪ মে শিকাগোর হে মার্কেট স্কয়ারে ঐতিহাসিক শ্রমিক সমাবেশে আবারও বর্বরোচিত হামলা চালায় পুলিশ। এতে প্রাণ হারান আরো চার শ্রমিক। পরে ৬ অক্টোবর মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত চার শ্রমিক নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। গড়ে ওঠে শ্রমিক-জনতার বৃহত্তর ঐক্য।

অবশেষে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সেদিন মালিকরা মেনে নিয়েছিলেন, ‘শ্রমিকরাও মানুষ’। পরে ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তঝরা অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ওই ঘটনার স্মারক হিসেবে পহেলা মে দিনটিকে ঘোষণা দেওয়া হয় ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস’ হিসেবে। এর পরিপেক্ষিতে ১৮৯০ সাল থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন দেশে এ দিনটি ‘মে দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।



মন্তব্য চালু নেই