কাজী আরেফ হত্যা

দুজনের ফাঁসি কার্যকর, অপেক্ষায় ১

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা কাজী আরেফ আহমেদকে হত্যার দায়ে তিন আসামির মধ্যে দুইজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১ মিনিটে যশোর কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। আসামিরা হল-কুষ্টিায়র কুর্শা গ্রামের উম্মতের ছেলে আনোয়ার হোসেন ও আবুল হোসেনের ছেলে রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু।

রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে অপর আসামি কুষ্টিয়ার মীরপুর উপজেলার রাজনগর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে সাফায়েত হোসেন হাবিবের ফাঁসি কার্যকর করা হবে বলে কারাগার সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে আজ সন্ধ্যার পর থেকেই ফাঁসি কার্যকরের সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। রাতে পরিবারে সঙ্গে আসামিদের শেষ দেখা হয়। কারা চত্বরে কৌতূহলী মানুষের ভিড় সামাল দিতে কারাগারে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। তিন আসামিকে তওবা পড়ানোর কাজও সম্পন্ন করা হয়।

১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জনসভায় ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয় কাজী আরেফ আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদনেতা ইসরাইল হোসেন ও সমশের মণ্ডলকে।

ওই ঘটনার পরদিন দৌলতপুর থানার এসআই মো. ইসহাক আলী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।

আলোচিত এ মামলার রায়ে ২০০৪ সালের ৩০ অগাস্ট কুষ্টিয়া জেলা জজ আদালত ১০ জনের ফাঁসি এবং ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।

এছাড়া ইলিয়াস, রাশেদুল ইসলাম ওরফে ঝন্টু, সাফায়েত হোসেন (হাবিব), আনোয়ার হোসেন, সাহির হোসেন, মান্নান মোল্লা, বাকের, রওশন, জাহান ও জালালের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।

আর রাফাত ওরফে রাফা, গারেস, তাসিরুদ্দিন, আসগর জোয়ারদার, নজরুল ইসলাম, ওয়ালিউর রহমান, একুব্বার, টিক্কা ওরফে জাব্বার, লাবলু, ফিরোজ ওরফে ফরু, লাল্টু ওরফে নুরুজ্জামানকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের কয়েকজনের আপিলের প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট ২০০৮ সালের ৩১ অগাস্ট নয় জনের মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখে।

হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে ২০১১ সালের ৭ অগাস্ট পাঁচজনের ফাঁসি এবং সাতজনের যাবজ্জীবনের রায় দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ইলিয়াস হোসেন মারা গেছেন আর মান্নান মোল্লা পলাতক। বাকি তিনজনের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ও রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করলেও গতবছরের ১৯ নভেম্বর তা খারিজ হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে যশোরের পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনকে চিঠি দিয়ে দণ্ড কার্যকরের সময়সূচি জানানো হয়েছে।

জেল সুপার শাহজাহান আহম্মেদ জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে যশোর কারাগারে তিন আসামির ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

রাতেই ৩ খুনির ফাঁসি কার্যকর



মন্তব্য চালু নেই